চকরিয়ায় ছাত্রকল্যাণ ফোরামের মাহফিল
নিজস্ব প্রতিবেদক :পিরোজপুর-১ আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেছেন, মানবরচিত কোনো মতবাদই দুনিয়াতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। একমাত্র ইনসাফ ও ভারসাম্যপূর্ণ আল্লাহর আইন দ্বারাই আল্লাহর জমিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। আর এজন্য প্রয়োজন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও আমানতদার লোক হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত হচ্ছে নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শ মানুষ গড়ার কারখানা। দুনিয়া বাদ দিয়ে আখিরাতে সফল হওয়া সম্ভব নয়। আর আখিরাত বাদ দিলে দুনিয়ার জীবন ব্যার্থ। তাই জামায়াতের সকল কর্মসূচি দুনিয়া ও আখিরাতমুখী। দুনিয়া চাষ করেই আমাদেরকে আখিরাতের সফলতা অর্জন করতে হবে।
আল্লামা সাঈদী পুত্র পিরোজপুর জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জননেতা মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ দ্বীনের দাওয়াত দিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত সমাজব্যবস্থার তীব্র বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু কোনো বাঁধাই তাদেরকে দ্বীনের দাওয়াত থেকে বিরত রাখতে পারেনি। আমাদেরকে সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দ্বীনের দাওয়াত চালিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদেরকেও জান ও মালের কুরবানি পেশ করতে হবে। যেমন করে জান ও মাল কুরবানির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছেন আমাদের শহিদেরা।
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে আগে নিজেদের ঘরে দাওয়াতী কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মাসুদ সাঈদী বলেন, ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য সবার আগে আমাদের নিজেদের ঘরকে ইসলামী আন্দোলনের উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত করতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনকে ইসলামী আন্দোলনে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। আল্লাহই আমাদের একমাত্র রব। তিনিই আমাদের একমাত্র পালনকর্তা, হুকুমদাতা, বিধানদাতা, রিজিকদাতা। এই কথাগুলো বিশ্বাস করার সাথে সাথে তা বাস্তবায়নে পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে নিজেও তা আমলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।
যুবকদের উদ্দেশ্যে মাসুদ সাঈদী বলেন, যুবকরাই ইসলামের প্রাণশক্তি। ইসলাম যেখানে যৌবনকালকে এত গুরুত্ব দিয়েছে, মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যৌবনকালকে ভালো কাজে ব্যয় করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে, সেখানে আমাদের দেশে অপশক্তিগুলো তরুণ-যুবকদেরদের নেশা, সন্ত্রাস অপকর্মের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আর পৃথিবীর প্রতিটি বিভাগেই যুবসমাজের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তাই আল্লাহর দেওয়া পবিত্র আমানত যৌবনের প্রতিটি ধাপ, মেধা, শ্রম ও প্রতি ফোঁটা রক্ত মানুষ সত্যিকার অর্থে আল্লাহর পথে ব্যয় করলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র কল্যাণে ভরে যাবে এবং পরকালের ভয়াবহ দিনে যেদিন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না সেদিন আল্লাহর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় লাভের সৌভাগ্য অর্জন করবে। অন্যথায় জাহান্নামের লেলিহান শিখায় অগ্নিদগ্ধ হতে হবে। আজ দেশের এই ক্রান্তিকালে আমরা চাই তরুণ-যুবকরা গড্ডলিকা প্রবাহে না ভেসে ইসলাম সম্পর্কে জানবে, ইসলাম প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এবং সে অনুযায়ী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হবে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন, জৈনপুরী দরবার শরীফের পীর মুফতি ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী বলেন, মহাগ্রন্থ আল কুরআন হলো মহান আল্লাহর মহাদান, রাসূল (সা)-এর শ্রেষ্ঠ মোজেজা, বান্দার জন্য রহমতের ভান্ডার। সর্বোপরি বিশ্বমানবতার মুক্তির মহাসনদ। কুরআন এমন একটি কিতাব যা তিলাওয়াত করলেও সওয়াব, শুনলেও সওয়াব, শিখলেও সওয়াব, শেখালেও সওয়াব, আমল করলেও সওয়াব, কাউকে আমল করতে উৎসাহিত করলেও সওয়াব। কুরআনি সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহিদ হলেও সওয়াব, গাজী হলেও সওয়াব। পৃথিবীতে কুরআন ছাড়া এমন কোনো গ্রন্থ নেই যা তার অনুসারীদেরকে এভাবে উজ্জীবিত করে। তিনি ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমান আকিদা নিয়ে ফাসাদ সৃষ্টিকারী কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক হওয়ার আহবান জানান উপস্থিত তৌহিদী জনতাকে।