Showing posts with label মুক্তমত. Show all posts
Showing posts with label মুক্তমত. Show all posts
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

চকরিয়া টাইমস: 

"চকরিয়ার মহিউদ্দিনকে মালয়েশিয়ায় অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি করে মানবপ্রাচারকারী চক্রের মূল হোতা হামিদ" শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে । সংবাদটি মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রচার করা হয়েছে । আমি উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে , মহিউদ্দিন ও আমি মালয়েশিয়াতে একই কোম্পানিতে চাকরি করতাম, এবং তিনি ভিন্ন বাসায় থাকতেন। গত ১২ মার্চ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার সময় মালয়েশিয়ান পুলিশ (ভিসা ছাড়া) অবৈধভাবে বসবাস করার অপরাধে তাকে আটক করে। পরবর্তী আটকের ২-৩ ঘন্টার মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জরিমানা দিয়ে মহিউদ্দিনকে মুক্ত করে আত্মীয়রা । পরবর্তী চাকরিরত কোম্পানিতে কাজ করতে গেলে পুলিশের অভিযোগের কারণে কোম্পানি আর চাকরিতে গ্রহণ করেনি । 

উক্ত চাকরিচ্যুতির ক্ষোভ থেকে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করা হয়েযছে। মহিউদ্দিন ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত নানাধরণের হুমকি দিয়ে আসছে। 

আমার পরিবার মহিউদ্দিনের পিতার সাথে যোগাযোগ করা হলে; তিনি পুলিশের কাছে জরিমানা দিয়ে মুক্ত হয়েছে বলে মুঠোফোনে শিকার করেন। যাহা আমাদের কাছে রেকর্ড সংরক্ষণ আছে । অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। কুচক্রী মহলের ইন্ধনে আমি ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে মানক্ষুন্ন করতে জাতির বিবেক সাংবাদিক ভাইদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে। তাই মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদে আমার পরিবার ও এলাকার সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।


প্রতিবাদকারী:

আব্দুল হামিদ, (মালয়েশিয়া প্রবাসী)

ছাইরাখালী,৯নং ওয়ার্ড, ফাঁসিয়াখালী, চকরিয়া।

ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের জন্য পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা দায়ী : মামুন মাহফুজ

ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের জন্য পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা দায়ী : মামুন মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক : 

আছিয়াকে নিয়ে কোন কথা লিখিনি বলিনি।

কেন সে কারণটা বলতেও আমার বুক কাঁপে।
এটা একটা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স। এর জন্য সরকার নয় পরিবার দায়ী। তবে সবচেয়ে বেশি দায়ী সমাজ ব্যবস্থা।
এই সমাজ ব্যবস্থা কাউকে ধনী বানিয়েছে কাউকে দরিদ্র বানিয়েছে কাউকে ক্ষমতাবান বানিয়েছে আর কাউকে অসহায় বানিয়েছে।
ধর্ষণের প্রধান কারণ এই বৈষম্য। যার শক্তি আছে সে তার চেয়ে কম শক্তিশালী বা দুর্বলের ওপর যেকোনো ধরনের উপায়ে নিপীড়ন করে।
ধর্ষণ যেকোনো পুরুষ করতে পারে। ধর্ষণ করার ক্ষেত্রে একটা পুরুষ চিন্তা করে না যাকে ধর্ষণ করবে সে শিশু নাকি যুবতী নারী! বরং সে চিন্তা করে এর সঙ্গে কিছু করলে আমার কিছু হবে কিনা যখন সে বুঝতে পারে যে এর সঙ্গে খারাপ কিছু করলেও আমার কিছু হবে না তখনই সে খারাপ কিছু করে।
কখন ধর্ষক এটা ভাবে?
যখন প্রতিপক্ষ দুর্বল হয় বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর উপর মানুষ অত্যাচার নিপীড়ন ধর্ষণ ইত্যাদি বেশি চালায়।
এসব তাত্ত্বিক কথা বলে আর লাভ নেই, মানুষ কোন সমস্যার মূল উপড়ে ফেলতে রাজি নয়, তাৎক্ষণিক সমাধান চায়।
আছিয়ার উপর এমন নিষ্ঠুর ঘটনা যে ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা ওই পশুটার কাছ থেকে আগেই পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু আছিয়ার বোন এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি তার দারিদ্র্যের কারণে। সামাজিক কারণে। আছিয়ার বাবা মার কারণে।
আছিয়ার বোন যখন তার শশুরের কাছ থেকে কুদৃষ্টির আভাস পেলেন তখনই তার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না কারণ আছিয়া সম্পূর্ণ স্বামী নির্ভর এবং তার বাবা মা অত্যন্ত দরিদ্র। এইচ অসহায়ত্ব এরকম অসহায়ত্ব নারীদেরকে ধর্ষিত হতে বাধ্য করে নিপীড়িত হতে বাধ্য করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে।
শশুরের কু মতলব টের পেয়ে আছিয়া স্বামী-সংসার ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা আছিয়ার বাবা-মায়ের জন্য অভিশাপ আর সমাজের জন্য কলঙ্ক। কোন মেয়ে বাপের বাড়ি ফিরে গেলে সেইটা মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় অপরাধ বড় লজ্জার। কার কতটুকু দোষ তার বিচার ছাড়াই মানুষ রায় দিয়ে দেয়।
ঘটনার দিন আসিয়া ও তার স্বামী কোথায় ঘুমিয়ে ছিল আর তার ছোট বোনটি কোথায় ঘুমিয়ে ছিল সেটি আমি আজ পর্যন্ত পরিষ্কার হতে পারিনি।
নিঃসন্দেহে বোন তাদের স্বামী স্ত্রীর মাঝখানে আছিয়াকে জায়গা দেননি। এমনকি আছিয়া কে আলাদা থাকতে দিলেও সেখানে তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা কিংবা চিন্তা করা বোনের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
আছিয়ার বোন আছিয়ার সর্বনাশ ঠেকাতে পারেনি। কিন্তু শ্বশুরের মতলব থেকে কুদৃষ্টি থেকে সে নিজেকে রক্ষা করেছে। সেজন্য আছি আর বোনকে স্যালুট অন্তত একজন নারী নিজেকে হেফাজত করতে পেরেছে।
কিন্তু একই স্থানে যদি আছিয়ার বোন না হয়ে আছিয়ার ভাই হত দৃশ্যপট টা কী হতো?
ভাই তার নিজের জীবন বিপন্ন করে হলেও বোনকে রক্ষা করত বোনের গায়ে একটা আঁচর লাগতে দিত না। একটা মেয়ে তার স্বামী তার বাবার চেয়েও তার ভাইকে বেশি ভালোবাসে ঠিক এই কারণে। একটা মেয়ে তার স্বামীর কাছে তার বাবার কাছেও যতটা নিরাপদ নয় তার চেয়েও বেশি নিরাপদ বোধ করে তার ভাইয়ের কাছে।
আজ থেকে কান খুলে শুনে রাখেন বোনকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর সময় আরেকটা বোনকে দিয়ে পাঠাবেন না, ভাইকে পাঠাবেন। ভাই যদি ছোট হয় সে তার বোনকে আগলে রাখার সমস্ত চেষ্টা করে এবং সেই ক্যাপাসিটি আল্লাহ তাকে দিয়ে দেন।
আর এ কারণেই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে পুরুষ হচ্ছে নারীর দায়িত্বশীল, রক্ষা কর্তা, অভিভাবক। আর এ কারণেই নারীদের দূরযাত্রায় হজ যাত্রায় একজন পুরুষ মাহরেম লাগে।
আমি আমার মেয়েকে স্কুলে পাঠাবার সময় কিংবা বাসায় একলা কখনো রেখে যাওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় তার সাথে তার ছোট ভাইকে রাখি। সে যদিও ছোট কিন্তু আমরা তার দায়িত্বশীলতা এই ছোটবেলাতেও যতটুকু দেখেছি তা সত্যি মুগ্ধ করার মত। আলহামদুলিল্লাহ। ভাই তার বোনের সঙ্গে এটা নিয়ে ওটা নিয়ে ২৪ ঘন্টা লড়াই করে কিন্তু বোনের হেফাজতের ক্ষেত্রে সে এক বিন্দু অবহেলা করে না, ছাড় দেয় না।
আমি নিশ্চিত আছিয়ার ক্ষেত্রে সেখানে যদি আছিয়ার বোন না হয়ে ভাই হত ঘটনা ঘটতো পুরোটাই উল্টো।

লেখক:
মামুন মাহফুজ
সাংবাদিক
চকরিয়ায় বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উপলক্ষে সেমিনার

চকরিয়ায় বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উপলক্ষে সেমিনার

চকরিয়া টাইমস:

চকরিয়ায় বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্পূর্ণ আরবি ভাষায় এক সেমিনার চকরিয়া পৌরশহরের ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) চকরিয়া আদর্শ শিক্ষক কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাতারবাড়ী মজিদিয়া সিনিয়র মাদরাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা এরশাদ উল্লাহ।

শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন চকরিয়া সোসাইটি শাহী মসজিদের প্রধান মুয়াজ্জিন হাফেজ মাওলানা জালাল উদ্দিন।
সংগঠনের সেক্রেটারি আমজাদিয়া মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আবদুল লতিফের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চকরিয়া আমজাদিয়া রফিকুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ সংগঠনের উপদেষ্টা মাওলানা এনয়ামুল হক।
সেমিনারে আরবি ভাষার তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মাস্টার রিদুয়ানুল ইসলাম, প্রভাষক মাওলানা মোরশেদ আলম, মাওলানা রুহুল আমিন আনসারী, মাওলানা কামাল উদ্দিন ও চকরিয়া গ্রামার স্কুলের হেড মাওলানা ইয়াসিন আকবর ইমরান।
এসময় চকরিয়া মিশকাতুল মিল্লাত দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা মুহাম্মদ আবুল কালাম, মাস্টার এহসানুল হক, মুহাম্মদ শরিফ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে সংগঠনের সফলতা এবং দেশ জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মহিউদ্দীন।
কক্সবাজারে হ্নীলার তিন রত্ন সংবর্ধিত

কক্সবাজারে হ্নীলার তিন রত্ন সংবর্ধিত

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের হ্নীলার তিন মেধাবী রত্নকে জমকালো সংবর্ধনা দিয়েছে কক্সবাজারস্থ হ্নীলা ফোরাম। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে শহরের হোটেল মিশুকের কনফারেন্স হলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত (সহকারী জজ) পলিনা আকতার স্মৃতি ও জয়নাল আবেদীন আল মারুফ ও ৪১ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে নুরুল মোস্তফা বিন বশিরকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আয়োজক কমিটির আহবায়ক সাবেক ছাত্রনেতা সরওয়ার কামাল সিকদার এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক ছৈয়দ আলমের পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন কাদেরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও হ্নীলা শাহ মজিদিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী, কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মফিজুর রহমান মাদানী ও রঙ্গিখালী ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত সহযোগি অধ্যাপক মাওলানা শফিকুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন-হ্নীলার কৃতি সন্তান খুরুশকুল গাজীর ডেইল দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাঈল, কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রভাষক এহসান উদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুক, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, কক্সবাজার হার্ভাড কলেজের প্রভাষক সিরাজুল কবির, উন্নয়ন কর্মী মোহাম্মদ আলী, বিশিষ্ট সমাজসবক এডভোকেট মীর জাহাঙ্গীর আলম, অভিভাবক আনোয়ার পারভেজ, বেলাল উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট আব্দুল আমিন, ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদ, এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, এডভোকেট নুরুল কবির, শিক্ষক ক্রীড়া সংগঠক শফিকুল ইসলাম মাহাদী, আব্দুর রহমান হাশেমী, আতিকুর রহমান, অনিক, মুহাম্মদ শাহজাহান, নুরুল আলম, রফিক উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে সহকারী জজ মাদারীপুর জেলায় কর্মরত পলিনা আকতার স্মৃতি ও সিলেট মৌলভীবাজার জেলায় কর্মরত জয়নাল আবেদীন আল মারুফ, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার কক্সবাজার সরকারী মহিলা কলেজে কর্মরত নুরুল মোস্তফা বিন বশির তাঁদের অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন। উপহার হিসেবে সংবর্ধিত তিনজনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পুরো দেশে এই তিন মেধাবী রত্ন আলো ছড়িয়েছে। টেকনাফের হ্নীলা থেকে গড়ে উঠা সহজ বিষয় ছিল না। তাদের অদম্য পড়াশুনা আর পরিশ্রম আজ সফলতা এনে দিয়েছে। মাদক আর রোহিঙ্গা তকমা থেকে ফিরে আসতে তারা উদাহরণ ও ভূমিকা রাখবে।
সীমান্ত শহরে মেধা, মনন ও যোগ্যতায় টপকিয়ে মাদকের তকমাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাবে টেকনাফ। এই আয়োজন পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক ট্র‍্যাকে রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা মনে করছেন।
চকরিয়ায় নদগর্ভে বিলীন ১৮টি বাড়ি

চকরিয়ায় নদগর্ভে বিলীন ১৮টি বাড়ি

শফিউল করিম সবুজ, চকরিয়া : 

দুইদিনের অতিভারী বর্ষনে মাতামুহুরি নদীর পার্শ্ববর্তী চকরিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কোচপাড়া এলাকায় ১৬-১৮টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 

এছাড়া চকরিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পৌরসভার কোচপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। 

তারা জানান গত দুই দিনের ভারী বর্ষনে ভাঙ্গন শুরু হয় শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে পরিপূর্ণভাবে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায় এতে প্রত্যেক বাড়ির গরুছাগল, টিউবওয়েল, দালানঘরসহ গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ বিলিন হয়ে গেছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা বলেন, আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি এখন নদীগর্ভে বিলিন গেছে। আমাদের মাথা গোজার আর ঠাঁই নেই। এবিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

চকরিয়ায় রাইজিং স্টার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ পূণর্মিলনী ও গুণিজন সংবর্ধনা সস্পন্ন

চকরিয়ায় রাইজিং স্টার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ পূণর্মিলনী ও গুণিজন সংবর্ধনা সস্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চকরিয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন রাইজিং স্টার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ পূণর্মিলনী ও গুণিজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান মঙ্গলবার (১৮জুন) সকাল ১০টায় ভাঙ্গারমূখ মধ্যম দিগরপানখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সম্পন্ন হয়েছে।

রাইজিং স্টার ফাউন্ডেশনের সভাপতি মুহাম্মদ রাইহানুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদী।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বোর্ড সেক্রেটারিট ডিভিশন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, মজিদিয়া দারুচ্ছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা নুরুল আবছার ছিদ্দিকি, সাপ্লাই সেইন কেন পার্ক রিজেন্সি বাংলাদেশ সহকারী ব্যবস্থপক মোহাম্মদ সাজ্জাত জুয়েল, চট্টগ্রাম জেলা দায়রা জজ আদলতের সহযোগী সরকারি আইনজীবী আহমেদ মিরাজ, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোশাররফ হোছাইন ফয়সাল, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ছৈয়দ মুহাম্মদ রাসেল, মায়ের ছোঁয়া কন্স্ট্রাকশনের সিইও মুহাম্মদ রেজাউল করীম, চকরিয়া নূরানী কাফেলার সেক্রেটারি মু. এহেছানুল হক, স্বপ্নচুড়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি মুহাম্মদ শাওন কবির হ্যাভেন, রাইজিং স্টার ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মোহাম্মদ সোহেল রানা পারভেজ।

এসময় দৈনিক বাংলাদেশের আলো চকরিয়া-পেকুয়া প্রতিনিধি ও জনপ্রিয় ফেসবুক অনলাইন সময়ের সংবাদের সম্পাদক শাহরিয়ার মাহমুদ রিয়াদ, ক্রাইম রিপোর্টার মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ, দৈনিক বিকাল বার্তা চকরিয়া প্রতিনিধি মুহাম্মদ আরফাতুল ইসলাম সানিসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিসহ গুণিজনদের হাতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।

পরে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন চকরিয়া সোসাইটি শাহী জামে মসজিদের খতিব ও কাকারা তাজুল উলুম দাখিল মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা হাফেজ বশির আহমদ।
সমাজে সুবিধা বঞ্চিতদের সফল অভিভাবক মানবিক সমাজকর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস

সমাজে সুবিধা বঞ্চিতদের সফল অভিভাবক মানবিক সমাজকর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস

বিশেষ প্রতিবেদক : 

অদম্য ইচ্ছাশক্তিই জান্নাতুল ফেরদৌসকে সমাজে পিছিয়ে পড়া অবহেলিত সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোর সফল অভিভাবকে পরিণত করেছে। লেগে থেকে মানুষের কল্যাণের জন্য খাটতে পারাটাই তার স্বার্থকতা। তার কাছে মানবিক হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল উদ্দেশ্য লক্ষ্য। এমনই একজন কর্ম উদ্যোমী সংগ্রামী নারীর নাম ইসলামপুরের জান্নাতুল ফেরদৌস।

জন্ম ও পরিচয় : কক্সবাজারের নতুন উপজেলা ঈদগাঁও ইসলামপুর ইউনিয়নের বামনকাটা গ্রামে ১৯৭৯ সালে ১০জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসা থেকে ১৯৯৩ সালে আলিম পাস করেন। সামাজিক ও পারিবারিক নানান বাধা বিপত্তির মুখেও তখন থেকে পরোপকারী মনোভাব পোষণ করেই চলতেন এই নারী। অন্যের ভালোতে তিনি মানসিক তৃপ্তি অনুভব করতেন। কম বয়সে ছোট খাটো সমাজসেবার মাঝপথে তিনি ১৯৯৯ সালে একই এলাকার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের এক সন্তানের সাথে বিবাহ বন্ধণে আবদ্ধ হয়ে সংসার জীবন শুরু করেন। 

অপরাজিতার সাথে যুক্ত ও প্রশিক্ষণ : ২০১৬ সালের তিনি অপরাজিতা প্রকল্পে যুক্ত হন। অপরাজিতার সাথে যুক্ত হওয়ার ফলে জান্নাতুল ফেরদৌস বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন। 

প্রশিক্ষণ জ্ঞান কার্যক্রম বাস্তবায়ন:  প্রশিক্ষণ থেকে জ্ঞান লাভ করার ফলে একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে সরাসরি মানুষের সেবা করার জন্য ২০১৬ সালের সংরক্ষিত আসনে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করে বিজয় লাভ করেন। অপরাজিতার কাছ থেকে প্রশিক্ষণের পর তিনি সমাজের সুবিধা বঞ্চিত কারা তাদের জানতে পারেন। তার প্রথম টার্গেট ছিল ইউনিয়ন এবং উপজেলা পরিষদের সেবাপ্রদানকারীদের  সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। অপরাজিতার বিভিন্ন সভা ও প্রশিক্ষণে তাদের সাথে পরিচয় হওয়ার সুযোগ হয়। যার ফলে তিনি তার তিন ওয়ার্ডে যারা বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছে তাদের তালিকা করেন। তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে তাদেরকে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করেন। যারা প্রতিবন্ধি তাদেরকে তিনি সবচেয়ে দুর্বল মনে করেন। তার পূর্বে যিনি জনপ্রতিনিধি ছিল তিনি সুবিধাবঞ্চিদের তেমন মূল্যায়ন করতেন না। ওইসব বৈষম্যমূলক আচরণের কথা মাথায় রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা জাগিয়ে তিনি ১০০জন প্রতিবন্ধীকে প্রতিবন্ধী ভাতা পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন। তার এলাকায় প্রায় প্রতিবন্ধী এখন ভাতার আওতায় চলে এসেছে। তিনি ২০০ জন গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভকালীন সেবা নিতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে পাঠাতে সহযোগিতা করেন। জন কিশোরীদের টিটি টিকার আওতায় আনেন। ৬০০ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও কৃমি নাশক ক্যাপসুল খাওয়াতে সহযোগিতা  করেন। ৪০ জন মহিলাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা, ১৫ জন মহিলাকে বিধবা ভাতা, এলাকার অবকাঠামুগত উন্নয়নের জন্য ৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। এইসব কাজ তিনি দক্ষতার সাথে করার জন্য  করার জন্য তিনি বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এর দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি ইউনিয়ন পরিষদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি, স্থানীয় মাদরাসা পরিচালনা  কমিটির সভাপতি, কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি, ইউনিয়ন অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং উপজেলা ও অপরাজিতা নেটওয়ার্কের নির্বাহী সদস্য। 

পরিশেষে বলা যায় জান্নাতুল ফেরদৌস একজন অপরাজেয় নারী প্রতিনিধি। তিনি মনে করেন মানুষের সেবা করতে টাকা লাগেনা; মনের ইচ্ছা শক্তিই যথেষ্ট। তিনি মনে করেন; মানুষের সেবা করতে পারলে মনের মধ্যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়।


ইকুনোর কঠোর পরিশ্রম সমাজে সফল নারী নেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে

ইকুনোর কঠোর পরিশ্রম সমাজে সফল নারী নেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সামাজিক বৈষম্য ও আত্মবিশ্বাস না হারিয়ে অসহায় ও দরিদ্র নারী সমাজের সম্মান ও সমান অধিকারের দিকে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ হন রোকসানা আক্তার ইকুনো। সমাজের সাহায্য এবং নিজের সাহসের জোরে রোকসানা অপরাজিতা নারীকে এক নতুন দিশা দেখাতে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। একজন মহিলা, অপরাজিতার, কোন কিছুই তাকে বিরক্ত করতে পারেনি। কারণ শক্ত হওয়ার জন্য তার ছিল সীমাহীন চেষ্টা। ক্ষমতা, শিক্ষা, বিশ্বাস এবং ইচ্ছাশক্তির প্রচেষ্টা তার নিজস্ব গল্প তৈরি করেছে এবং সমাজের কাছ থেকে তার স্বামীর সমর্থন ও সমর্থনে তিনি এখন ক্ষমতা ও সম্মানের সাথে নারীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সমাজ পরিবর্তনে অবদান রাখছেন। তিনি বলেন, অপরাজিতা প্রকল্প সব সময় আমার সঙ্গে লেগে আছে, আমার সাহস, ইচ্ছাশক্তি, স্বামীর সমর্থন এবং কঠোর পরিশ্রম আমাকে অন্যতম ক্ষমতাশালী নারী নেত্রী হিসেবে স্থায়ী করে তুলেছে। পাশাপাশি সমাজের মানুষের মনোভাব আমাদের সমাজ পরিবর্তনে নারীদের সফল হওয়ার পথ প্রশস্ত করতে সহায়তা করছে। 

পরিচয় জন্ম ও শিক্ষা:

১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নিদানিয়াপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে সাধারণ নারী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন রোকসানা আক্তার ইকুনো। বিয়ের পর নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অপরাজিতা ২০১৯ সালে এই প্রকল্পে যোগ দিয়ে প্রকল্পের পক্ষ থেকে প্রদত্ত সবধরনের প্রশিক্ষণ ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে উক্ত বিষয়গুলোতে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হয় তিনি।

কার্যক্রম বাস্তবায়ন: 

অপরাজিতা ইকুনো অত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পালংখালী ইউনিয়নে অংশগ্রহণ ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। মেয়ে হয়েও বাবার সঙ্গে নিয়মিত সালিশে যেতেন। তার স্বপ্ন ছিল একজন সমাজকর্মী হয়ে গ্রামের অসহায় মানুষের সেবা করা এবং একজন আত্মবিশ্বাসী সফল নারী নেত্রী হওয়া। তাই এলাকার হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়নের সহায়তায় তিনি সামাজিক-রাজনৈতিক অর্থনৈতিক কর্মকা- করে এলাকার অসহায় দরিদ্র মানুষের প্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হন এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য অসহায় স্বামী হারানো বিধবাদের তালিকা তৈরি করেন এবং উপজেলা সমাজকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দশজনকে বিধবা ভাতা পেতে সহায়তা করেন। এলাকার প্রায় ৫০ জন দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত ছেলে-মেয়ে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করেন। তিনি তাদের স্কুলে ভর্তি দেখাতে সাহায্য করতেন। 

তিনি বাল্যবিবাহ বন্ধ, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আটটি ট্রায়ালে অংশ নিয়ে সফলতার সাথে সমস্যা সমাধানে মতামত ও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেন। স্থানীয় প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নকে সমর্থন করে তিনি সর্বদা লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে অবদান রেখেছেন। জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে ২৮০ জন ৯৯৯ জন ও ১০৯  জন নারীকে নির্যাতন বা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতন করতে পেরেছেন। বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্য। ইকুনো ইউনিয়ন ও উপজেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

তিনি উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে একজন আদর্শ কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে অপরাজিতা প্রকল্পের বিভিন্ন কমিটি ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে সমাজ পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যান। তার বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সহায়তায় তিনি সমাজে পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি নারীর সামাজিক মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেন। তার ইচ্ছাশক্তি ও সাহসের মাধ্যমে তিনি নারীর ক্ষমতা ও মর্যাদার লড়াইয়ে অগ্রগতি অর্জন করেছিলেন। যেখানে নারীরা বঞ্চিত ছিল এবং তার কার্যকলাপ একটি সুস্থ ও সক্রিয় সমাজ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। 

পরিশেষে বলা যায়, প্রত্যন্ত গৃহবধু থেকে পালংখালী ইউনিয়নের অন্যতম অপরাজেয় মানুষ হিসেবে সমাজে অবদান রেখে চলেছেন ইকুনো। আর অপরাজিতা এসে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ইতিবাচক চিন্তা ভাবনার কারণে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে প্রমাণ করেছেন; আমরা ঘরের বাইরের নারী। তার সাফল্যের গল্প সমাজের অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা ও অনুকরণীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।


চকরিয়ায় এমপি সৈয়দ ইবরাহিমকে ফুলেল শুভেচ্ছায় প্রশাসনের বরণ

চকরিয়ায় এমপি সৈয়দ ইবরাহিমকে ফুলেল শুভেচ্ছায় প্রশাসনের বরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চকরিয়া-পেকুয়া আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেছেন উপজেলা প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) উপজেলা পরিষদের মোহনা মিলনায়তনে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদীর নেতৃেেত্ব সভার প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য সৈয়দ ইবরাহিমকে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে বরণ করা হয়। 

এসময় চকরিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র মো. আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাহাতুজ্জামান দিপুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি এবং আইন শৃংখলা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 


প্রহসনের নির্বাচন বর্জনের আহবান জেলা জামায়াতের

প্রহসনের নির্বাচন বর্জনের আহবান জেলা জামায়াতের

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কক্সবাজার জেলা শাখার এক বিশেষ দায়িত্বশীল সমাবেশ জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমেদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ২০২৪ অনলাইন প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

দায়িত্বশীল সমাবেশে জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমেদ আনোয়ারী বলেছেন, দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করে আওয়ামীলী একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে জন সেন্টিমেন্ট ও গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে। যা দেশবাসী ইতোমধ্যে  প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশের মানুষ উৎসবমুখর ও সকলের অংশগ্রহণে সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বীতার মাধ্যমে নির্বাচন দেখতে আগ্রহী। 

কিন্তু আওয়ামী লীগ জনমত উপেক্ষা করে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার আবেগকে ভয়ভীতির মাধ্যমে দমিয়ে ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় রচিত করতে যাচ্ছে। জামায়াত ইসলামী দেশ ও দেশের মানুষের মতামত, ইচ্ছা ও আবেগকে সম্মান দেখিয়ে পাতানো ও প্রহসনমূলক নির্বাচন বর্জন করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শুরু থেকেই সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আ’লীগ যে প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে তা প্রত্যাখ্যান করে আমরা জেলাবাসীকে একতরফা ও এক ব্যক্তির ইচ্ছা পূরণের নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি। এছাড়া  মানবাধিকার, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য জেলাবাসীর প্রতি সমাবেশ থেকে আহ্বান জানানো হয়। 

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন ফারুকী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, জাহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সেক্রেটারি শামসুল আলম বাহাদুর, কক্সবাজার শহর আমীর আবদুল্লাহ আল ফারুক প্রমুখ।

প্রতিকূলতাকে জয় করে প্রশংসায় ভাসছে অবহেলিত তামান্না!

প্রতিকূলতাকে জয় করে প্রশংসায় ভাসছে অবহেলিত তামান্না!

চকরিয়া টাইমস : 

মানুষের জীবনে চলার পথে আসে নানা ধরনের বাধা। কিন্তু তাই বলে কি জীবন থেমে থাকবে! এমন অনেকেই আছেন যারা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যান সামনের দিকে। অর্জন করেন সফলতা। একজন সংগ্রামী অপ্রতিরোধ্য নারীর নামই হচ্ছে তামান্না। নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের মূর্ত প্রতীক অপরাজিতা তামান্না। কেবল নিজের অদম্য ইচ্ছাকে সম্বল করে চরম প্রতিকূলতাকে জয় করে তামান্না তৃণমূল থেকে সবার অলক্ষ্যে সমাজে নিজের জন্য জায়গা তৈরি করেছেন। তামান্না সব ধরনের বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সফল হয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন সমাজে অপরাজিতা নামে। অবহেলিত তামান্না এখন সমাজে সর্বজনে প্রশংসার পাত্র হিসেবে পরিচিত।

কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ভোমাংখিল গ্রামে ১ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সালে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় মোছাম্মৎ তামান্নার। মাত্র নবম শ্রেণীতে পড়াবস্থায় তার বিয়ে হয়। তবে লেখাপড়ার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ থাকায় স্বামীর সহযোগীতায় ১৯৯৯ সালে গর্জনিয়া ইসলামীয়া আলিম মাদরাসা থেকে অনেক বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে দাখিল পাস করেন। সেই সময়ে দাখিল পাশ করা তিনিই ওই এলাকার একজন শিক্ষিত নারী। কারণ তখনকার সময়ে ওই এলাকায় শিক্ষা বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রতি মানুষের ভ্রান্ত ধারণা ছিল। তিনি বর্তমানে তিন সন্তানের জননী। একজন শিক্ষিত মা হওয়ায় তিন সন্তানকেই শিক্ষিত করতে পেরেছেন। তিনি অনেক সংগ্রাম করে গড়ে উঠেছেন। অভাব-অনটন দুর করে পরিবারকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ২০০২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন এনজিওতে চাকরি করেন। বিভিন্ন এলাকায় বিচরণ করে লক্ষ্য করেন তার প্রতিবেশীরা প্রতিনিয়ত কারণে অকারণে নারীদের নির্যাতন করছেন। তিনি চিন্তা করেন কীভাবে এই নির্যাতন থেকে নারীদেরকে মুক্তি করা যায়। পাশাপাশি তার মত নারীদেরকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা যায়। নারীদের অধিকার নিয়ে তিনি কাজ করবেন। কিন্তু তিনি জানতো না যে অধিকার কী, কোথায় গেলে তার সঠিক বিচার পাবে। এই সমস্ত বিষয় জানার জন্য তিনি ২০১২সালে অপরাজিতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পে যুক্ত হন। তখন তিনি এনজিও এর সহযোগীতায় গ্রামের দরিদ্র পরিবারকে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা, মশারি, গভীর ও অগভীর নলকূপ এবং নিরাপদ পানির ট্যাপ বিনামূল্যে বিতরণ করেন। পাশাপাশি তিনি গর্ভবর্তী নারী ও কিশোরীদের সাথে স্বাস্থ্য সচেতন বিষয়ে নিয়মিত উঠান বৈঠক করেন। তার এসব কার্যক্রমের ফলে তিনি অল্প সময়ে তার এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। প্রকল্প থেকে বাস্তবায়িত সকল সভা ও প্রশিক্ষণে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। এসব বিষয়ে জ্ঞান লাভ করার ফলে, তামান্না অনেকগুলি পদক্ষেপের ফলে ২০১৬ সালে তিনি কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনে ইউপি নির্বাচন করেন এবং বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করেন। হয়ে উঠেন নিজ এলাকায় একজন যোগ্য সমাজসেবক। যার ফলে তিনি নিজ প্রচেষ্টায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতায় তিনটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন, ১৪৫টি উঠান বৈঠক  করেন, ৩২ জনকে বয়স্ক ভাতা, ৯ জনকে বিধবা ভাতা, ১১ জনকে প্রতিবন্ধী ভাতা, সাত জনকে মাতৃত্বকালীন ভাতা, ৭৫টি পারিবারিক বিরোধ নিরসন, ৬ হাজারেরও বেশী লোককে সরকারি হট লিংক নং ৯৯৯ ও ১০৯ কল করতে সচেতন করেন। 

মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সহজ করতে তার এই মহৎ উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত। তার এই কার্যক্রমের ফলে এলাকায় অনেকটা নারী নির্যাতন ও বাল্য বিবাহ কমে এসেছে। এইসব কাজ করার পেছনে তার দক্ষতা আরো বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় নিজেকে একজন বড় মানের নারী নেত্রী হিসেবে স্থাপন করার ইচ্ছা এবং সামাজিক উন্নয়নে তার যোগদান রাজনৈতিক ক্ষমতার মূর্তপ্রতিক হয়েছে, তিনি বর্তমানে ইউনিয়ন অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি, উপজেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি ও জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়াও তিনি কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন বিএনপি মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা। ইউনিয়ন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য। গ্রামের নারীদের নিয়ে তিনি সংগঠন তৈরী করেছেন তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভাপতি, এক্সিলেন্ট ওয়াল্ড এর মার্কেটিং অফিসার, বড় জুমছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য  ও দক্ষিণ কচ্চপিয়া হাজিপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সহ-সভাপতি  হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসেবে অপরাজিতা প্রকল্পকে মনে করেন। তিনি আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ আসন নির্বাচন করবেন। তার মানবিক এবং সমাজসেবা এক নতুন সমাজের নির্মাণে তার মৌলধর অসামান্য অবদান রয়েছে। 

এব্যাপারে মোছাম্মৎ তামান্না বলেন, সংসারের অভাব-অনটনের পাশাপাশি অপরাজিতা প্রকল্প আমাকে প্রতিষ্ঠিত হতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। আমাকে সামনের দিকে নিয়ে গেছে। একসময় আমি যাদের কাছে ছিলাম অবহেলিত, আজ তারাই আমার কাজের প্রশংসা করছে। অসীম সাহসের সাথে জীবনের সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। সকল চ্যালেঞ্জ ও অপ্রতিকূল পরিবেশে আমি অদম্য ইচ্ছাকে সম্বল করে চরম প্রতিকূলতাকে জয় করেছি।


সমাজে নারী জাগরণে অপরাজিতা রাবেয়া বসরী এখন অনন্য দৃষ্টান্ত

সমাজে নারী জাগরণে অপরাজিতা রাবেয়া বসরী এখন অনন্য দৃষ্টান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

একসময় নারীরা সমাজে চরম অবহেলিত, লাঞ্ছনা, বঞ্চনার পাত্র ছিল এবং শুধু সন্তান পালন ও গৃহস্থালি সংক্রান্ত কাজের জন্য বিবেচনা করা হতো। তবে এখন সমাজের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটেছে এবং বর্তমানে সমাজের মূলধারার আলোকশক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয় নারীদের। তারা রাজনীতি, ব্যবসা, খেলাধুলা, সামাজিক কর্মকান্ড, কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রভৃতি ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছে। এটা সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের জন্য নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও ইতিবাচক পদক্ষেপ। তারা সমাজের সর্বত্র এবং প্রতিটি স্তরকে আলোকিত করছে। এমনি একজন নারী রাবেয়া বসরী। তিনি রামু উপজেলার ফাতেখারকুল ইউনিয়নের মধ্যম মেরুলিয়া গ্রামে ১৯৭২ সালের ১২ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি কম শিক্ষিত হলেও শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকায় তার ছেলে মেয়েদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তিনি ২০০৩ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ফতেহারকুল ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নির্বাচন করে আসছেন। শুধু ২০১৬ সালের নির্বাচন ছাড়া অন্যান্য ইউপি নির্বাচনগুলোতে তিনি বিজয় লাভ করেন। তিনি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তার সকল কাজে স্বামী ও পরিবার  সহযোগিতা করে থাকেন। তারা যদি তাকে সহযোগিতা না করতেন তাহলে তিনি আজ এত দূর আসতে পারতেন না বলে তিনি জানান। তিনি ২০১২ সালে অপরাজিতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পে যুক্ত হন। অপরাজিতার সাথে যুক্ত হওয়ার পর থেকে সভাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। যা তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। 

কার্যক্রম: এইসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সভা গ্রহণ করার ফলে রাবেয়া বসরীর মধ্যে কাজের দক্ষতা এবং পারফরম্যান্স আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে যায়। তিনি জনগনের সেবার জন্য নিজের দ্বার উমুক্ত করে দেন। মানুষের সুখে দুখে তিনি এগিয়ে যান। তিনি একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার সাধ্যমতো মানুষকে সহযোগিতা করে থাকেন। একজন উদার মনের মানুষ হিসেবে তিনি পর্যায়ক্রমে তিনটি এতিম মেয়ে শিশুকে নিজের বাড়িতে লালন পালন করে তাদেরকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষের মত মানুষ করে সম্পূর্ণ নিজের খরচে বিয়ে দেন। বিয়ের পরও তিনি অন্যান্য অভিভাবকের মতো নিয়মিত খোঁজ খবর রাখেন তাদের। তার মানবিক এবং সমাজসেবা প্রবন্ধনে তার ব্যক্তিগত ভূমিকা অসীম হয়েছে। এক নতুন সমাজের নির্মাণে তার মৌলধর অসামান্য অবদান রয়েছে। একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত সমাজ সৃষ্টির জন্য তার উদ্দীপনা স্বার্থের অগ্রায়ণ করে এবং তার পরিশ্রম এই লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে। নারী নেত্রী রাবেয়া বসরী বাল্য বিবাহ বিষয়ে এলাকার সর্বসাধারণকে সচেতন করার মাধ্যমে ২০টি বাল্য বিবাহ বন্ধ করেন। সালিশী বৈঠকে বুঝাপড়ার মাধ্যমে ৯০টি পারিবারিক বিরোধ নিরসন করেন। তাছাড়া সরকারি সুযোগ-সুবিধার আওতায় এনে মাতৃত্বকালীন ৩০জন মহিলাকে মাতৃত্ব ভাতা প্রদান করেন, ২৫জন বিধবা মহিলাকে বিধবা ভাতা প্রদান করেন, ১০জনকে প্রতিবন্ধি ভাতা প্রদান করেন, সরকারি হট লিংক নাম্বার ৯৯৯ ও ১০৯ সেবা নিতে ১৫০ জনকে সচেতন করেন, ৩২জনকে বয়স্ক ভাতা প্রদান করেন, ৭৫জন ঝরে পড়া শিক্ষার্থীকে স্কুলমুখী করেন। এলাকার অবকাঠামগত উন্নয়নে ১২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। তার সফল জীবনযাত্রায় অনেক সাফল্যসমূহ লুকিয়ে আছে। সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ২০১৩ সালে উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা পুরস্কার গ্রহণ করেন। পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক দলের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করায় রামু উপজেলার মহিলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা এবং জেলা মহিলা বিএনপির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি রামু উপজেলা মানবাধিকার কমিটির মহিলা সম্পাদিকা। স্থানীয় বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক (উত্তর ফতেখারকুল মুসলিমপাড়া) পরিচালনা কমিটির একজন অন্যতম সদস্য হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। এইসব পদবী ও মর্যাদা লাভ করার পেছনে অপরাজিতার অবদান অন্যান্য বলে স্বীকার করেন তিনি। আগামীতে তিনি রামু উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি একজন সুপরিসর, প্রশিক্ষিত নারী যা সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আত্মপ্রকাশ করেছেন। তিনি সকল সময়ে সামাজিক কর্মসূচি এবং মানবিক সেবা করার জন্য নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত রেখেছেন। রাবেয়া বসরীর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় এবং পরিশ্রম তার সাফল্যের গল্পটি সবার কাছে একটি উৎস হিসেবে দাখিল করা যায়। রাবেয়া বসরী, একজন সততা, কর্মঠতা এবং সবার জন্য সেবা করার মাধ্যমে নারী শক্তি এবং সমাজের উন্নতির দিকে এক নতুন উৎসাহী পথে চলছেন। তার উদ্দীপনা একটি অপরাজিতা নারীর জীবন চরিত্র যা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে অন্তর্ভুক্ত আছে এক সমৃদ্ধ এবং উন্নত সমাজ সৃষ্টির জন্য তার উদ্দীপনা স্বার্থে অগ্রায়ণ করে এবং তার পরিশ্রম এই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, রাবেয়া বসরীর প্রবণতা ও প্রতিবাদশীলতা তার সম্পর্কে শেখা যায়, তার সহনশীলতা এবং কার্যকরভাবে তার প্রয়োজনীয়তা সমৃদ্ধি করতে সহায়ক হয়েছে। এবং তার অপরাজিতা এবং উন্নত সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি প্রবৃদ্ধি করছেন। 

রাবেয়া বসরী বলেন “নারীর অগ্রযাত্রা ও ক্ষমতায়ন দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং লিঙ্গ সমতা অর্জন করার জন্য অপরিহার্য। অনেক বিশ্ব নেতা এবং প-িত যুক্তি দিয়েছেন যে লিঙ্গ সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন প্রায় অসম্ভব। টেকসই উন্নয়ন পরিবেশগত সুরক্ষা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গ্রহণ করে এবং নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া নারীরা পুরুষের মতো উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেনা।

এটা বলা দরকার যে, শিক্ষা নারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তাদের আরও ভালো চাকরি খুঁজে পেতে সহায়তা করে এবং তারা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে উৎসাহ বোধ করে। তারা জনস্বার্থে যুক্তি তর্ক করে এবং স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অন্যান্য অধিকারের জন্য সরকারের কাছে দাবি পেশ করে। বিশেষ করে, শিক্ষা নারীদের এমন পছন্দ করার ক্ষমতা দেয় যা তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্য, তাদের সুস্থতা এবং সংগ্রামী জীবনে বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে উন্নত করে। 


অসংখ্য বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের কারিগর একজন আশরাফ আলী রাজমিস্ত্রি

অসংখ্য বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের কারিগর একজন আশরাফ আলী রাজমিস্ত্রি

মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (চকরিয়া টাইমস) : 

বরইতলী-চকরিয়ার নির্মাণ শিল্পে একটি অতি পরিচিত নাম আশরাফ আলী প্রকাশ আশরাফ আলী রাজমিস্ত্রি। তিনি উত্তর বরইতলীর ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পিতা মৃত আব্দুল জব্বার।

অত্যন্ত অমায়িক, ভদ্র, কর্মনিষ্ঠ ও সজ্জন এ ব্যক্তি আমার নিকট প্রতিবেশী। ছোটবেলা থেকেই আমরা তাকে 'বদ্দা' (বড় ভাইয়া) বলে ডেকে আসছি। বিগত ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি  ৩৮ বছর যাবত তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করে যাচ্ছেন। বলতে গেলে তখন এ এলাকায় উল্লেখযোগ্য কোনো রাজমিস্ত্রি ছিলোনা। তিনিই ছিলেন প্রথম রাজমিস্ত্রি- যিনি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এলাকার বেকার যুবকদেরকে বিনামূল্যে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মপোযোগী করে গড়ে তোলেন। তাঁর হাতে গড়া শতাধিক শিষ্য বর্তমানে রাজ মিস্ত্রিতে প্রশিক্ষিত হয়েছেন। এসব শিষ্য কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নিজ পরিবারকে স্বাবলম্বী ও উন্নত করে যাচ্ছেন। 

দিন দিন রাজমিস্ত্রির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের চাহিদাও বাড়ছে। এখন এলাকার বাইরে থেকে কোনো রাজমিস্ত্রি এনে নির্মাণ কাজ করতে হয়না; বরং আশরাফ আলী মিস্ত্রির শিষ্য-প্রশিষ্যরাই বাইরে গিয়ে সুনামের সাথে কাজ করে প্রচুর টাকা-পয়সা রোজগার করে আসছেন। এমনকি আশরাফ মিস্ত্রির শিষ্য / প্রশিষ্যরা বিদেশে গিয়েও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। এজন্যে তাঁর শিষ্যরা তাঁকে উস্তাদ-জ্ঞানে বেশ সমীহ করে চলেন।

তিনি উচ্চ বা সাধারণ শিক্ষিত না হলেও মোটামুটি অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তি। তার মেলামেশা ও কাজকারবার বেশির ভাগ শিক্ষিত জনদের সাথে হওয়ায় এর প্রভাবও তার চলাফেরা এবং কর্ম জীবনে প্রতিফলিত হয়। এমন একজন উদ্যোক্তা এলাকার জন্য সম্পদ। তার অবদানে আজ বহু নিম্নবিত্তের সন্তান দক্ষ কর্মীতে পরিণত হয়েছেন। এজন্য তিনি অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। আমাদের উচিত এমন ব্যক্তিকে যথাযথ প্রমোট করা।

আমার মতে তিনি একজন গুণীব্যক্তি হিসেবে সংবর্ধনা পাওয়ার উপযুক্ত। কারণ গুণীর কদর না হলে গুণীব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেন না। উচ্চ শিক্ষিত নাহলে কোনো গুণীব্যক্তি সংবর্ধনা পাওয়ার উপযুক্ত হবেন না, এমন কোনো কথা নেই। কারণ গুণী হয়ে কেউ জন্মগ্রহণ করেন না; বরং কর্ম গুণেই মানুষ স্মরণীয় হন।

প্রসঙ্গত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-র সিও বরিতলী ৩নং ওয়ার্ডের কৃতী সন্তান জনাব মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি জনাব ড. মছরুরুল মওলা, শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান, বরইতলী ৪নং ওয়ার্ডের কৃতী সন্তান ড. মোহাম্মদ আলী, ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম হিন্দুপাড়ার ইঞ্জিনিয়ার বাবু দিলীপ কুমার, বরইতলীর পহরচাঁদা নিবাসী কবি অধ্যাপক রুহুল কাদের সহ এলাকার অসংখ্য ডাক্তার, কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ সকলকে বিশেষ অবদানের জন্য গণসংবর্ধনার আয়োজন করা যায়। এতে আশা করা যায় বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের এলাকার কৃতীব্যক্তিদের পরিচয় লাভ করে বিশেষভাবে উপকৃত হবে।

সমাজে অবহেলিত নারীদের অনুপ্রেরণা একজন ফিরোজা হাকিম

সমাজে অবহেলিত নারীদের অনুপ্রেরণা একজন ফিরোজা হাকিম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ছোটবেলা থেকে অত্যন্ত পরিশ্রমী একজন নারী ফিরোজা হাকিম। তিনি অনুধাবন করতে পারেন নারীকে স্বাবলম্বী হতে হলে বিভিন্ন কাজ জানতে করতে হবে। তাই তিনি বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি এসে, শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামীর সাথে পরামর্শক্রমে আত্মনির্ভরশীল বিভিন্ন কাজের উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেন। যাতে কারো দ্বারস্থ হতে না হয়। সমাজে নিজের অবস্থানকে সমুন্নত রাখতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান অপ্রতিরোধ্য ফিরোজা হাকিম।  

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যুগ যুগ ধরে নারীরা নানা বঞ্চনার শিকার। অসংখ্য প্রতিকূল সময় পাড়ি দিতে হয় নারীদের। এ সমাজে নারীদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা। তবে সকল সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নারীরা এখন মাথা উচু করে দাঁড়াবার কল্যাণমুখী কৌশল রপ্ত করেছে। নারীরা হিমালয়ও জয় করেছে; অভিযানে যাচ্ছেন মহাকাশে। এছাড়া নিজ মেধা ও পরিশ্রমে দেশের নারীরাও হয়ে উঠছেন অপরাজিতা। একজন নারী হিসেবে ফিরোজা হাকিম তার অনন্য উদাহরণ। সমাজের অবহেলিত অসংখ্য নারীদের অনুপ্রেরণা যোগাবে ফিরোজা হাকিমের অপরাজিতা হবার সফলতার নেপথ্যে গুচ্ছগল্পগুলো। 

তিনি নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আনসার ভিডিপির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রাণিসম্পদ থেকে হাঁস মুরগী পালনের উপর উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং মৎস্য অধিদপ্তর থেকে মৎস্য চাষের উপর প্রশিক্ষণ নেন। ব্র্যাক থেকে স্বাস্থ্য সেবিকার প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাস্থ্য সেবিকার কাজ শুরু করেন। এছাড়া যুব উন্নয়ন থেকে হস্তশিল্প ও গবাদিপশু পালনের উপর প্রশিক্ষণ করেন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ বিউটিশিয়ান ও ব্লক বাটিকের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি ২০১৬ সালে সাহারবিল ইউনিয়নে সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচন করেন এবং কালো টাকা ও পেশী শক্তির কাছে তিনি হেরে যান। ২০১৯ সালে অপরাজিতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পে যুক্ত হন। অপরাজিতার সাথে যুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ইউনিয়ন অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি উপজেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।

ফিরোজা হাকিম নানাবিধ প্রশিক্ষণ গ্রহণের ফলে তিনি নিজেই একটি সাহারবিল নারীকল্যাণ সংঘ নামের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত। তিনি অনুধাবন করেন যে নারীরা শুধু সংসার ও সন্তান নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এবং পরিবারের সদস্য দ্বারা নির্যাতিত হন, পরিবার ও সমাজে তারা কোন অবদানকে মূল্যায়ন কওে না। তাদের সেই বিভীষিকার জীবন মুছে দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন । বর্তমানে তার নারী কল্যাণ সংগঠনে ৪০জন নারী ব্লক বাটিক ও হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। সেখানে তিনি প্রশিক্ষকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তার সংগঠন থেকে এ পর্যন্ত ২হাজারের বেশি নারী বিভিন্ন কাজের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছে। 

ফিরোজা হাকিম একজন উদার মনের মানুষ। এ সংগঠন থেকে গরীব ও অসহায় নারীদের প্রশিক্ষণের জন্য নেয়া হয় না কোন টাকা । তার এ জীবনযাত্রায় অনেক সফলতার গল্প লুকিয়ে আছে। তিনি নিজ উদ্যোগে তৈরি করা প্রতিষ্ঠানে ৬ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীরা স্বাবলম্বী হতে পারেন। ফিরোজা হাকিম এ সকল কাজের পাশাপাশি তিনি সামাজিক কাজ, যেমন বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন ৫টি, নারীদের বহুমুখি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে ২০টি উঠান বৈঠক করেন, পারিবারিক বিরোধ নিরসন করেন ৩০টি। তিনি নির্বাচিত নারী প্রতিনিধি না হয়েও এলাকার মানুষকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতে সহযোগিতা করেন, বিশেষ করে যুবদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি যুবদের, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং আনসার ভিডিপি থেকে প্রশিক্ষণ পেতে সহযোগিতা করেন। 

অপরাজিতা ফিরোজা হাকিম তিনি তার এলাকার ২৫ জন যুবদের আইসিটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে সহযোগিতা করেন। তিনি ব্যবস্থাপনার উপরে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ করান ৩০ জনকে। সামাজিক কাজ করতে গিয়ে তিনি অনেক বাঁধার সম্মুখীনও হয়েছেন। কিন্তু তিনি সব বাঁধা অতিক্রম করে আপন মহিমায় সামনের দিকে এগিয়ে চলেছেন দুর্বার গতিতে। ফিরোজা হাকিম একজন সময়ের সাহসী নারী হিসেবেও সর্বজনের কাছে পরিচিত। তিনি ২০১৯ সালে সমাজ উন্নয়েনে অসাধারণ অবদান রেখেছেন যে নারী ক্যাটাগরিতে জয়ীতা পুরস্কার পেয়েছেন। তার সাফল্যের পেছনে তার স্বামীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবদান রয়েছে। 

ফিরোজা হাকিম বিভিন্ন সংগঠনের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদের পারিবারিক বিরোধ নিরসন নারী ও শিশু কল্যান স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং আর.কে নুরুল আমিন চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন। তিনি উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যুবদের প্রশিক্ষণের কমিটিতে আছেন। তিনি সমাজের পিছিয়ে পরা নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। ফিরোজা হাকিমের আগামী দিনের স্বপ্ন; তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে ভোট করবেন। চকরিয়া উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ ফিরোজা হাকিমকে এক নামে চিনে। তিনি সকল সময়ে সামাজিক কর্মসূচি এবং মানবিক সেবা করার জন্য নিবেদিত। 

জয়িতা ফিরোজা হাকিম বলেন “নারীদের নিজেদের অধিকার অর্জনে সোচ্চার হতে হবে। অধিকার কেউ দেয় না, অর্জন করে নিতে হয়। প্রত্যেক সংগ্রামী নারী একজন অপরাজিতা। তিনি বলেন, অনেকের সংগ্রামের গল্প ভিন্ন হতে পারে; কিন্তু কমবেশি সব নারীর সংগ্রাম একই। অপরাজিতা মানে বিজয়ী। পরাজয়ে ভেঙ্গে না পড়ে অদম্য মনোবলে প্রতিকূলতা পেরিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নারীরাই অপরাজিতা। প্রতিকূলতা, নির্যাতন, অবহেলা পেরিয়ে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিতদের সংগ্রামের করুণ গল্প জেন্ডার বৈষম্যহীন সুন্দর ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে হলে নারীর ক্ষমতায়নের বিকল্প নেই”। 


অদম্য কর্মস্পৃহায় থেমে থাকেনি বুলবুল জান্নাতের সাফল্যের যাত্রা

অদম্য কর্মস্পৃহায় থেমে থাকেনি বুলবুল জান্নাতের সাফল্যের যাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজে নারীরা নানা বঞ্চনার শিকার। এ সমাজে নারীদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা। তবে সকল সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে নারীরা এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছেন। এছাড়া নিজ মেধা ও পরিশ্রমে দেশের নারীরাও হয়ে উঠছেন অপরাজিতা। শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অদম্য কর্মদ্যোমী বুলবুল জান্নাতও এ ধরনের একজন অপরাজিতা নারী হিসেবে নিজেকে সমাজে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। 

নাম বুলবুল জান্নাত; পিতা মৃত আবু সৈয়দ ও মাতা মোছাম্মদ রহিমা খাতুন। তিনি ১৯৮০ সালের ১২জুলাই চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড নয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৪ সালে সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতীত্বের সাথে অষ্টম শ্রেণী পাস করে নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। পড়ালেখা চলাকালীণ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন বিএমচর ৬নং ঘোনা এলাকার আব্দুল্লাহর সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। সংসার জীবনে তিনি এক মেয়ে ও তিন ছেলে সন্তানের জননী। 

বুলবুল জান্নাত ২০১১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১, ২, ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু কিছু সংখ্যক ভোটে তিনি হেরে যান। হেরে গিয়েও শক্ত মনোবলের কাছে হারেননি বুলবুল জান্নাত। কোন অংশে থেমে থাকেনি সমাজসেবা থেকে শুরু করে সামাজিক কার্যক্রম। তাই তিনি সমাজের বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে ২০১৬ সালে তিনি আবার নির্বাচন করেন এবং এতে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি নির্বাচিত নারী প্রতিনিধি। তার সকল কাজে তার স্বামী ও পরিবার সহযোগিতা করে থাকেন। তারা যদি তাকে সহযোগিতা না করতেন তাহলে তিনি আজ এতদূর আসতে পারতেন না বলে তিনি জানান। তিনি ২০১৯ সালে অপরাজিতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পে যুক্ত হন অপরাজিতার সাথে যুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি কোচিং মেন্টরিং, নেতৃত্ব বিকাশ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিদের দায়িত্ব কর্তব্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ, ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি বেসরকারি কমিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ, লিডারশিপ অ্যাডভোকেটি নেটওয়ার্কিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে মত বিনিময় সভাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।

কার্যক্রম: এ সকল প্রশিক্ষণ ও সভায় অংশগ্রহণের ফলে বুলবুল জান্নাতের কাজের দক্ষতা আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে যায়। তিনি জনগণের সেবার জন্য নিজের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। মানুষের সুখে দুঃখে তিনি এগিয়ে যান। তিনি একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সাধ্যমত মানুষকে সহযোগিতা করে থাকেন। তিনি একজন উদার মনের মানুষ হিসেবে জনগণের কাছে পরিচিতি লাভ করেন। সামাজিক ও মানবিক কাজে তার ব্যক্তিগত ভূমিকা রয়েছে অসীম এবং এক নতুন সমাজ নির্মাণে তার মূলধারা সম্মান অব্যাহত রয়েছে। তার পরিশ্রম এই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে। তিনি বর্তমানে বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। যেখানে নারীরা ৩নং প্যানেলের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কর্মদক্ষতার মধ্যদিয়ে এলাকায় বাল্যবিবাহ বিষয়ে সচেতন করেন ২৫টি পরিবারকে, বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন ১৫টি এবং শতশত পরিবারের পারিবারিক বিরোধ নিরসন করেন। 

তিনি ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহযোগিতায় ৩০ জন মহিলাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান, ২৫ জন বিধবা মহিলাকে বিধবা ভাতা এবং ১০ জন প্রতিবন্ধীকে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করে দেন। এছাড়াও নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অনেক গরীব অসহায় পরিবারকে সহযোগিতা করেছেন ও করে যাচ্ছেন। অনেক পরিবারকে সুপেয় পানির কষ্ট লাঘবে তিনি টিউবওয়েলের ব্যবস্থাও করে দেন। ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৯৯৯ ও ১০৯ নম্বরে কল করে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধামূলক সেবা পেতে ২শতাধিক জনগণকে নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করেন। তিনি ৩২ জনকে বয়স্ক ভাতা প্রদান করেন ও সমাজের অবহেলিত ঝরে পড়া ৭০ থেকে ৮০জন শিক্ষার্থীকে স্কুলমুখী করেন। এলাকার অবকাঠামগত উন্নয়নে ১৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন তার সফল জীবনযাত্রায় অনেক সাফল্যসমূহ লুকিয়ে আছে। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের শিক্ষা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক দলের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার ফলে তিনি বিএমচর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন এবং বহদ্দারকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন। এসব পদবী ও মর্যাদা লাভ করার পেছনেও অপরাজিতার অবদান অন্যতম বলে স্বীকার করেন। 

তিনি একজন খুব ক্ষুদ্র পরিসর প্রশিক্ষিত নারী যা সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আত্মপ্রকাশ করেছেন। তিনি সকল সময়ের সামাজিক কর্মসূচি এবং মানবিক সেবা করার জন্য প্রবৃদ্ধি করেছেন বুলবুল জান্নাত জীবনের প্রতিটি অধ্যায় এবং উৎস হিসেবে দাখিল করা যায়। বুলবুল জান্নাত একজন সততা, কর্মঠ, এবং সবার জন্য সেবা করার মাধ্যমে নারী শক্তি আর তার শক্তি হিসেবে কাজ করছে তার স্বামী। এবং সমাজের উন্নতির দিকে এক নতুন উৎসাহী পথে চলছেন তার উদ্দীপনা একটি অপরাজিতা নারীর জীবন চরিত্র যা প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তার সাফল্য অন্তর্ভুক্ত আছে এক সৌন্দর্য এবং উন্নত সমাজ সৃষ্টির জন্য তার উদ্দীপনা স্বার্থের অগ্রায়ন করে। তিনি আগামীতেও এভাবেই জনগণের পাশে থাকবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বুলবুল জান্নাত বলেন, “নারীদের কাজকে পুরুষ স্বীকৃতি দিতে চায় না; পুরুষের কাজটাকে নিজেরা বড় করে দেখে” তাই দেখিয়ে দিতে চাই পুরুষের পাশাপাশি আমরাও পারি সমাজটাকে বদলে দিতে। 


শায়খ আহমদ উল্লাহ একটি অনুপ্রেরণা : প্রফেসর এ.বি ওয়াহেদ

শায়খ আহমদ উল্লাহ একটি অনুপ্রেরণা : প্রফেসর এ.বি ওয়াহেদ

চকরিয়া টাইমস :

শায়খ আহমদ উল্লাহ একটি অনুপ্রেরণা। মাদ্রাসা শিক্ষিত মানে খয়রাতি গোষ্ঠী। হুজুর, মাওলানা মানে ভিক্ষুকের জাত। দাঁড়ি, টুপি, পাঞ্জাবি, পাগড়ি মানে ভিক্ষার প্রতীক। ইসলাম মানে ভিক্ষার ধর্ম। সমাজে প্রতিষ্ঠিত এই ধারণা মিথ্যা প্রমাণ কর যাচ্ছেন শায়খ আহমদ উল্লাহ।
তিনি একজন আলেম, একজন আলোচক, একজন বক্তা, একজন সর্বজন গ্রহনযোগ্য ওয়ায়েজ, একজন ইউটিউবার, একজন উদ্যোক্তা, একজন মানবপ্রেমী, একজন দেশপ্রেমিক। ওয়াজ, বক্তব্য, লেখালেখি থেকে উপার্জিত সব অর্থ দিয়ে করে যাচ্ছেন মানুষকে স্বাবলম্বী করবার অন্তহীন প্রচেষ্টা। প্রতিষ্ঠা করেছেন আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন। সারাদেশেের বেকার যুবক-যুবতিদের দিচ্ছেন রিকশা, সেলাই মেশিন সহ স্বাবলম্বী করবার বিভিন্ন উপকরণ। সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত শারীরিক প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য যোগান দিচ্ছেন বিভিন্ন উপকরণ। মরহুম হাফেজ্জী হুজুর, মরহুম আবদুল জব্বার( র:) গণের পর শায়ক আহমদ উল্লাহর বুনিয়াদি ইসলাম চর্চা অন্ধকারে একটি উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা।
ইসলামের আবির্ভাব, বিকাশ ও মধ্যযুগের আলেমদের বাস্তব প্রতিচ্ছবি শায়খ আহমদ উল্লাহ। আম্বিয়ায়ে কেরাম মানব জীবনের যে মোলিক সমস্যা নিয়ে কাজ করেছিলেন তিনি শুরু করেছেন ঠিক সেই জায়গা থেকেই। তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে যাচ্ছেন পেটের ক্ষুধা ও অসুস্থতায় তাফসির শুনিয়ে কাজ নাই। তিমি প্রমাণ করে যাচ্ছেন ইসলাম মানে ধর্ম ব্যবসা নয়, ইসলাম মানে শর্তহীন সেবা। ইসলাম মানে মানব জীবনের অন্তহীন সমস্যার সমাধান।
যারা আকিদা, ফেরকা, তত্ত্ব, মতবাদ দিয়ে এই সমাজকে মারাত্মকভাবে বিভক্ত করে যাচ্ছেন, যারা ইসলামকে জনমানুষের মনে বিষিয়ে তুলেছেন, রাষ্ট্রের আরো দশটি সমস্যা বাড়িয়ে তুলছেন, যারা আলেমদের ভিক্ষার প্রতিচ্ছবি বানিয়েছেন, সেইসব ভন্ডদের গালে অন্তহীন চপেটাঘাত করে যাচ্ছেন শায়ক আহমদ উল্লাহ। দেখাদেখি আরো অনেকের মধ্যে বোধোদয় ঘটবে আশাবাদী। শায়খের দীর্ঘায়ু এবং সুস্থতা কামনা করছি।

লেখক:
গবেষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
চকরিয়া, কক্সবাজার।
বাঁশ বাগানের ফাঁকা জায়গাটা অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য : শাকিলুর রহমান শাকিল

বাঁশ বাগানের ফাঁকা জায়গাটা অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য : শাকিলুর রহমান শাকিল

চকরিয়া টাইমস : 

আমার দেখা অসম্ভব রকমের সুন্দরতম দৃশ্য এটি। ছবিটার দিকে অনেকক্ষণ অপলক তাকিয়ে থাকলে 'জীবনের সকল আয়োজন'কে কেবলই অর্থহীন মনে হয়। কোনো এক বাঁশ-বাগানের মধ্যখানে ফাঁকা জায়গায় ঠিক এমনই একটা ঘর আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা না চাইলেও একদিন সেখানেই আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে।


এই কবরটা কী সুন্দর আলোকজ্জল তাইনা? মাইয়্যেতের লাশটা কবরে শুইয়ে দেওয়ার পর, স্তুপ আকারে যে লাল মাটিগুলো পাশেই রাখা আছে, সেগুলো দিয়ে যখন খুব ভালোভাবে মাইয়্যেতকে চাপা দেওয়া হবে, তখন কবরের ভেতরটা ঠিক কেমন হবে? খুব অন্ধকারাচ্ছন্ন তাইনা? আচ্ছা! একটু কি ফাঁকা জায়গা বাকি রইবে? যেখান দিয়ে সামান্য আলোকছটা ভেতরে প্রবেশ করে অন্ধকার কবরটাকে একটু আলোকময় করে তুলবে! রইবে কি?

মু'মিনগণ সত্যিই বড় সৌভাগ্যবান! তাদের কবর ঘুটঘুটে অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে না। নেক আমল তাদের বন্ধু হয়ে কবরকে আলোকিত করে রাখবে। আচ্ছা! নেক আমলের দ্যুতি কেমন হতে পারে? নিশ্চয়ই সেটা খুবই প্রশান্তিদায়ক হবে। মু'মিনগণের বিষয়টা বড় ইর্ষণীয়! সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরটাকে আল্লাহ তাদের জন্য ফুলের বাগান বানিয়ে দিবেন। তাদের কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না! তারা সেখানে নিশ্চিন্তে ঘুমাবে! তাদেরকে তখন কেউই বিরক্ত করবে না!

হে করুণার আঁধার! হে রাব্বে কারীম! হে রাব্বে রাহীম!
মুমিন না বানিয়ে আমাদেরকে অন্ধকার ঐ ঘরটায় ফিরিয়ে নিয়েন না! আমাদেরকে আপনার প্রিয় বান্দাদের দলভুক্ত করে নিন! যাতে করে আমাদের ছোট্ট এই মাটির ঘরটা হয়ে যায়, 'জান্নাতের বাগিচা! আলোকজ্জল, আলোকময়! 

--------------------------------------------
লেখক: কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি 
দৈনিক ইনকিলাব
নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আমার ভাবনা : শাহ নেওয়াজ সুমন

নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আমার ভাবনা : শাহ নেওয়াজ সুমন

চকরিয়া টাইমস : 

তাদের মতে আগের শিক্ষাব্যবস্থা ছিলো শুধু জ্ঞান নির্ভর যেটাতে শিক্ষার্থীরা অভ্যস্ত আর বর্তমান শিক্ষানীতি অনুসন্ধান নির্ভর যা অনেকটা গবেষণার মতো।তবে আমার কাছে এই শিক্ষাক্রমটি সম্পূর্ণ বাস্তবতা বিবর্জিত বলে মনে হয়।
আপনি যে স্টুডেন্টকে পুরো বছরে একটা বই থেকে ১০ টা জ্ঞানমুলক প্রশ্ন শেখানো টাফ, সেইখানে স্টুডেন্টরা কেমনে নতুন শিক্ষানীতিতে অনুসন্ধান নির্ভর শিক্ষার সাথে খাপ খাইয়ে নিবে? আর নতুন শিক্ষানীতিতে যেহেতু পরীক্ষাটা ওভাবে আগের মতো নাই,সেহেতু একেবারেই বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা বিমুখ হবে। কেননা পরীক্ষায় পাশ করার জন্য কিংবা রোল ১, ২, ৩ ক্রমে আসার জন্য একটু আধটু হইলেও পড়তো।
বর্তমানের শিক্ষাব্যবস্থা অনেকটা প্র্যাকটিকেল নির্ভর, সেখানে অনেক পিরিয়ড রাখা হয়েছে ক্লাসরুমের বাইরে, সেটাতেও অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসবে, ক্লাসে আসার প্রয়োজনবোধ করবে না। আর ক্লাসে না আসার কুফলটা কত ক্ষতিকর সেটা কোভিট-১৯ এর শিকার যারা তারা বুঝতে পারে।
আমরা পুরো ১২ বছর গণিতের অনুশীলনগুলোর অংক করেও গণিত এক্সপার্ট হতে পারিনি বা দুর্বলতা এখনো আছে,সেইখানে সকল অনুশীলনের অংক বাদ দিয়ে, গল্পের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে গণিত শিখিয়ে কতটুকু গণিতে দক্ষ করে তুলবে প্রশ্ন থেকেই যায়।
এইবার আসি ইংরেজির বেলায়, ইংরেজি যতটুকু দেখলাম মোটামুটি ভালো মনে হয়েছে,কেননা ওখানে কমিউনিকেটিভ ইংলিশে জোর দেয়ার বিষয়টা ভালো লেগেছে এইটা দরকার আছে।তবে সম্পূর্ব গ্রামার পার্ট বাদ দিয়ে একজন শিক্ষার্থী কিভাবে একটা ভাষা নিজের দখলে আনবে,সেটা আমার বোধগম্য নয়।
সে ইংরেজিতে কথা বলা শিখতে পারলো,সেটা ঠিক আছে, কিন্তু ইংরেজিতে যদি শুদ্ধ করে কিছুই লিখতেই না জানে,তাহলে তার এ শেখাটা পূর্ণাঙ্গ হইলো কই, গ্রামার ছাড়া আপনি একটি ভাষা কখনোই শুদ্ধভাবে লিখতে পারবেন না।
সবচেয়ে ক্ষতিকর হচ্ছে, পরীক্ষাটা কে ছেলেখেলা বানিয়ে দেয়া, পরীক্ষা আপনি প্রাইমারি লেভেলে না নেন, কিন্তু মাধ্যমিকে এইভাবে পরিক্ষাটাকে গুরুত্ব না দেয়া, খুবই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত, কারণ বাংলাদেশর শিক্ষাব্যবস্থা একেবারে সর্বোচ্চ লেভেল পর্যন্ত পরিক্ষা নির্ভর। সেটা থেকে হঠাৎ বেরিয়ে আসাটা বোধহয় একটু রিস্কি হবে।
সর্বোপরি যারা এই শিক্ষানীতি প্রণয়নে কাজ করেছে,তাদের সকলকে আগামী একবছরের জন্য একেবারে মফস্বলের মাধ্যমিক স্কুল গুলোতে শিক্ষকতা করতে দেয়া উচিৎ, তখন তারা শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্বিক বিষয়টা পারতো,বুঝলেই তারা কখনো এই শিক্ষানীতিতে যাই তো না।
এই শিক্ষানীতি যাদের হাত ধরে বাস্তবায়ন তাদেরকে কতটুকু তৈরি করতে পারছে সরকার সেটাও একটা প্রশ্ন, আমার বিশ্বাস এখনো বাংলাদেশের প্রায়ই অর্ধেকরো বেশি শিক্ষক এই বিষয়ে কোনো ট্রেনিং পাইনি, যারা মাস্টার ট্রেইনার তারাও কতটুকু বুঝে, সেটা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়।
কৃষি মন্ত্রী একটা ভালো কথা বলেছেন কয়েকদিন পর পর নতুন নতুন মানুষ আসে, নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে, সেগুলো তারা ছাপিয়ে দেয়। এইটাতে ওই কর্তা ব্যক্তিদের আবার লাভ ও আছে, একটা নতুন শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়া মানেই, অনেক টাকার হিসাবনিকাশ।
সবশেষে একটা কথা বলি, পরিক্ষানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসার মুল কারণ মনে হয় আমার কাছে তারা বর্তমান পরিক্ষাগুলোর প্রশ্ন ফাস ঠেকাতে পারে না,যার কারণে পরিক্ষার সিস্টেমটাই বাদ দিয়ে দিলো। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর চেয়ে নাহিদ ও আমার কাছে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন মন্ত্রী ছিলো বলে মনে হয়।
এই শিক্ষানীতি আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে একেবারেই পড়াশুনা বিমুখ এতে কোনো সন্দেহ নাই।

লেখক:
শিক্ষক- চকরিয়া গ্রামার স্কুল।
পরিবেশ বান্ধব সামুদ্রিক লবণ উৎপাদনে চকরিয়ায় পদক্ষেপের এডভোকেসি কর্মশালা

পরিবেশ বান্ধব সামুদ্রিক লবণ উৎপাদনে চকরিয়ায় পদক্ষেপের এডভোকেসি কর্মশালা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

“পরিবেশ বান্ধব উপায়ে সামুদ্রিক লবণ উৎপাদন ও ব্যবসা জোরদারকরণ কর্মসূচি” শীর্ষক চকরিয়া উপজেলা পর্যায়ে এডভোকেসি কর্মশালা মোহনা মিলনায়তনে সম্পন্ন হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকাল এগারোটায় পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের বাস্তবায়নে এবং পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। 

পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম দক্ষিণ জোনের সহকারী পরিচালক ও জোনাল ম্যানেজার মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিসিক কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক মোঃ জাফর ইকবাল ভূঁইয়া ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস.এম নাছিম হোসেন। 

শুরুতে তথ্যভিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্টের ম্যানেজার রঞ্জন কান্তি পন্ডিত। 

এসময় পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক, বিভিন্ন লবণ কেন্দ্রিক মিল মালিক ও চাষি সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।