আ'লীগ-জাপার সাথে কোনো সমঝোতা মানা হবেনা : কক্সবাজারে রাশেদ খাঁন

নিজস্ব প্রতিবেদক: 

গণঅধিকার পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেছেন, 'শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যাকারী দল আ.লীগ ও জাতীয় পার্টির সাথে কোন সমঝোতা মানা হবেনা। 

তিনি বলেন, 'কক্সবাজার হবে শান্তির শহর, এখানে আর কোন ইয়াবা বদির জন্ম হবেনা। ইয়াবা বদির কাছ থেকে মাদক ব্যবসার ৫০% কমিশন পেতেন ওবায়দুল কাদের। আগামী এক মাসের মধ্যে কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বানও জানান তিনি। এজন্য কক্সবাজারের ডিসি-এসপিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিও জানান তিনি।' 

শেখ পরিবার ও আওয়ামী হাইকমান্ডের কাউকে গ্রেফতার না করার রহস্য জানতে চেয়ে রাশেদ খান বলেন, 'আ.লীগ, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের দোসরদের রাজনীতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।'

গণঅধিকার পরিষদ কক্সবাজার জেলা শাখা আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় রাশেদ খাঁন এইসব কথা বলেন।

আজ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, হানাহানিমুক্ত সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভাটির আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ, কক্সবাজার জেলা। 

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন আরও বলেন, 'আগামী এক মাসের মধ্যে কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত জেলা হিসেসে ঘোষণা করতে হবে। কক্সবাজারের মানুষ আমার কাছে অভিযোগ করেছে, এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নাই। ডিসি-এসপি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এখনো আ.লীগের প্রেতাত্মারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। যারা এখানে গুম খুনের নির্দেশদাতা, তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।'

রাশেদ খান বলেন, 'এই কক্সবাজারে ওসি প্রদীপের তাণ্ডব আমরা দেখেছি। দুইশ'র অধিক মানুষকে সে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু কাদের নির্দেশে তিনি হত্যা করলেন? তাদেরকে কি বিচারের আওতায় আনা হয়েছে? এখানে মেজর সিনহা হত্যার শিকার হয়েছে। তখন কোন গণমাধ্যম নিউজ করেনি। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছি। এরপর আলোচনায় আসে, ওসি প্রদীপ আটক হয়। 

তিনি বলেন, 'মিয়ানমার থেকে টেকনাফ হয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা আসে। এতে বিজিবির হাত থাকার অভিযোগ আছে। টেকনাফ সীমান্তে সিসি ক্যামেরা বসাতে না পারলে এগুলো ধরা যাবেনা। আমরা চাইনা টেকনাফে আর কোন বদির জন্ম হোক। বদির সাম্রাজ্য ভেঙেচুরে খানখান করতে হবে।' 

রাশেদ বলেন, 'আমাদের স্পষ্ট কথা, শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এখনো শেখ পরিবার ও আওয়ামী হাইকমান্ডের কেউ গ্রেফতার হয়নি। তার মানে কি এখানে কোন সমঝোতা হয়েছে? আমরা গণহত্যাকারী দল আ.লীগ ও জাতীয় পার্টির সাথে কোন সমঝোতা মানবো না। আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। অবশ্যই তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। জাপাকে ১৯৯১ সালে সুযোগ দেওয়ার খেসারত আজও দিতে হচ্ছে। আ.লীগকে এবার সুযোগ দিয়ে এই খেসারত আর দিতে চাইনা।'

তিনি আরও বলেন, 'এই কক্সবাজারের মানুষ অত্যন্ত সহজ-সরল। এখানে মহান আল্লাহর রহমত রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডার এই কক্সবাজার। এইদ জেলাকে মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আর কোন গুম-খুন এখানে হতে দেওয়া যাবেনা।' 
গণঅধিকার পরিষদের কক্সবাজার জেলা আহবায়ক মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য শহীদুল ইসলাম ফাহিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার ডলি, সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম) লোকমান হোসাইন, কেন্দ্রীয় পার্বত্য বিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদের প্রাইম, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এ্যাড.মোঃ নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মোঃ শাহ্ আলম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আহবায়ক ডাক্তার ইমদাদুল হাসান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আহবায়ক রোরহান উদ্দিন, কক্সবাজার জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফকরুল আলম প্রমুখ। এছাড়া মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তৌহিদ বেলাল। 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, গণঅধিকার পরিষদের কক্সবাজার জেলা সদস্য সচিব মোরশেদ আলী। 

পরে বিকেল চারটার দিকে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তৌহিদ বেলালের সভাপতিত্বে এতে রাশেদ খাঁন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: