হারবাং জামায়াতের সমাবেশ সদস্য ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর সাবেক এমপি মজলুম জননেতা আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, ছাত্রজনতার গনঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে মানুষের মুক্তির দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের চেতনায় কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র গঠনে আমরা বাংলাদেশকে নতুন করে সাজাতে চাই। দেশের জনগণ সেই সাজানোর দায়িত্ব মানবতার মুক্তির সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে দিতে চায়।
তিনি বলেন, সীমাহীন দূর্নীতি ও জুলুম নির্যাতন করে শেখ হাসিনাসহ তাদের অন্তত তিন শতাধিক এমপি-মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে । সালমান এফ রহমান ও কিছু চিহ্নিত লোক দেশের অধিকাংশ ব্যাংককে দেউলিয়া করেছে।
তিনি আরো বলেন, কয়েক লক্ষ কোটি টাকা শেখ হাসিনা নিজেই বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে । পাচারকৃত এসব টাকা ফেরত আনলে অন্তত চার বছরের বাজেটের সমান টাকা হবে ।
সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, শ্রমিকরা দুমুঠো ডাল-ভাত খেয়ে শান্তিতে থাকতে চায়। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বিলাসি নয়, এদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা উচ্চাবিলাসী। তাদের কোটি টাকার সম্পদ থাকলেও বিদেশে গিয়ে বাড়ি করতে হয়।
তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবের সাড়ে তিন বছরের রাজত্বে দেশের সকল গণমাধ্যম বন্ধ, রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ করে দেশে দূর্ভিক্ষ এনেছিল । আর শেখ হাসিনা টানা সাড়ে পনের বছরের শাসনে দেশে জোর যার মুল্লুক তার নীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে একের পর এক পরিকল্পিত গণহত্যা সংঘটিত করেছে। শেখ মুজিবের চেয়ে শেখ হাসিনা বিশ গুন অপরাধ বেশি করেছে। শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে তার জন্য তাকে ফাঁসির মঞ্চ ছাড়া কোথাও জায়গা দেয়া যায় না।
জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ৫আগষ্ট ছাত্রজনতার গনঅভ্যুত্থানের পর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ কখনো রিকসা লীগ, কখনো আনসারলীগ, কখনো ইসকন লীগসহ বিভিন্ন লীগ হয়ে আবির্ভূত হচ্ছে। তাদের সর্বশেষ ভার্সন হচ্ছে আওয়ামী ইসকন লীগ। এদেশে আর কখনও ফ্যাসিবাদ কায়েমের সুযোগ পাবেনা আওয়ামী লীগ। তিনি আওয়ামী লীগকে সাবধান করে দিয়ে বলেন, সময় থাকতে ভালো হয়ে যান, মসজিদে ঢুকে পড়েন, ওয়াক্ত মতো নামায আদায় করেন, কুরআন পড়েন। দেশের মানুষের ওপর নিজেদের করা জুলুমের ক্ষমা চান, তাওবাহ করেন আল্লাহর কাছে।
তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভারতীয় ইসকন লীগ প্রকাশ্য দিবালোকে চট্টগ্রাম আদালতে চুনতির কৃতি সন্তান এপিপি এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। কোন উস্কানিতে পা না দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। এমনকি শহীদের দাফন ও কবর জিয়ারত শেষে ঢাকা ফেরার পথে সেই পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সার্জিস আলমকে গাড়ী চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। স্বৈরাচাররা বিদেশে বসে দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্ত করছে। তাই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় হারবাং ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হারবাং ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে সহযোগী সদস্য ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগর আমীর আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী এসব কথা বলেন।
হারবাং ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা শেখ আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমীর সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল ফারুক। তিনি বলেন, ৫আগস্ট ছাত্রজনতার গনঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। ছাত্রজনতার এই অর্জনকে কোনভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, চকরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল বশর, সাবেক উপজেলা আমীর মাওলানা ছাবের আহমদ, নায়েবে আমীর মাস্টার মুহাম্মদ মুছা, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা ছৈয়দ করিম, সাবেক উপজেলা সেক্রেটারী মাস্টার রশিদুর রহমান, হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা জহির উদ্দিন আহমদ বাবর, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা নুরুল আলম, খুটাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রহমান, বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ছালেকুজ্জামান, লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম মোস্তফা কাইছার প্রমুখ।
পুরো সমাবেশ সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি জুনাইদ সিকদার ও সাবেক ছাত্রনেতা শাহেদ উদ্দিন রাজু।
0 comments: