অভিযোগ গরু ব্যবসায়ীদের
বিশেষ প্রতিবেদক: কক্সবাজারে প্রাচীনতম ঈদগাঁও গরুর বাজার থেকে চাঁদাবাজির টাকা ডাকাতদের পকেটে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইজারার বাইরে অতিরিক্ত মোটা অংকের টাকা জোর আদায় করে সে টাকার বড় অংশ ভাগ-বাটোয়ার করেন ইজারাজার এবং ডুলাহাজারা, খুটাখালী ও চকরিয়ার চিহ্নিত ডাকাতরা।
সম্প্রতি ডুলাহাজারায় সেনা কর্মকর্তা খুনের জড়িত ডাকাতদের নিয়মিত চাঁদার টাকা ভাগ দিতেন বলে ঈদগাঁও গরু বাজারের ইজারাদার রমজান আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, ইজারাদার রমজানের মাধ্যমে ঈদগাঁও গরু বাজার কেন্দ্রিক চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন ডাকাত হেলালের নেতৃত্বাধীন ডুলাহাজারার ওই ডাকাত দল। সেনা কর্মকর্তা হত্যায় হেলাল ও তার দলের সদস্যরা জড়িত বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে তারা অধিকাংশ গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
ঈদগাঁও গরুর বাজারে বেচাকেনার সাথে জড়িত অনেকে অভিযোগ করেছেন, পশু ক্রেতা-বিক্রেতার কাছ সরকারি নিয়ম মতে গরু প্রতি বিক্রেতা ৭০০ ও ক্রেতা ৫০০ টাকা করে ১২০০ টাকা হাছিল নেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে গরু-মহিষ কিনতে আসা ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে গরু বহনকারী প্রতি গাড়ি থেকে অবৈধভাবে ১১ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে আসছে ইজারাদার রমজান।
এই বিষয়ে ইজারাদার রমজান গরু ব্যবসায়ীদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, ডাকাতমুক্ত হয়ে নিরাপদে গরু বহন করে নেয়ার জন্য চকরিয়া, খুটাখালী ও ডুলাহাজার ডাকাতদের দিতে এসব চাঁদা নেয় তিনি ও তার ম্যানেজার ফিরোজ।
গরু ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, ডাকাদের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির ফাঁদ বসিয়েছে রমজান আলম। ভয় দেখিয়ে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু কিনতে আসা ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে প্রতি গাড়ি থেকে সাড়ে ১১ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে। এই টাকা থেকে দিয়ে অস্ত্র ও ডাকাতির নানা রসদ কিনেন ডাকাতরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো ব্যবসায়ী টাকা দিতে না চাইলে বা গড়িমসি করলে তাদের গরুবহনকারী গাড়িতে ডাকাত লাগিয়ে দেয়া হয়। চাঁদা না দেয়ায় ২০২২ সালের ৫ মার্চ ঈদগাঁও বাজার থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাওয়ার পথে ডুলাহাজারা মালুমঘাট থেকে অস্ত্রধারী ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে গাড়িসহ গরুর লুট করে। এই ঘটনায় গরুর মালিক রামুর আবু তাহেরের ম্যানেজার মোস্তাক বাদি হয়ে ইজারাদার রমজানকে প্রধান আসামী করে ডাকাতদের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানা ডাকাতির মামলা করেছিলেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
উক্ত মামলার পর বহুদিন আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। পরে পরিস্থিতি হালকা হলে ফিরে এসে আবারো অবৈধ চাঁদাবাজি শুরু করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইজারাদার রমজানুল আলম সিকদারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। একাধিক মাধ্যমে জানা গেছে, তিনি রহস্যজনক কারণে দেশের বাইরে রয়েছেন!
0 comments: