বেইলী রোড অগ্নিকাণ্ডে স্ত্রী-কন্যাসহ প্রাণ গেলো কাস্টমস অফিসারের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছে স্ত্রী, কন্যাসন্তানসহ কক্সবাজারের উখিয়ার ছেলে কাস্টমস অফিসার (ইন্সপেক্টর) শাহ জালাল উদ্দিন (৩৫)। পরিবারের অন্য সদস্যরা হলেন- কাস্টমস অফিসারের স্ত্রী মেহেরুন নেসা হেলালী (২৪) ও তাদের মেয়ে ফাইরুজ কাশেম জামিলা (৪)। তিনজনেরই মরদেহ শনাক্ত করেছে পরিবার।

শুক্রবার (১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেহেরুনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার হোসেন হেলালী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে গিয়ে মেয়ে, জামাতা ও নাতনির পোশাক দেখে মরদেহ শনাক্ত করে।

মোক্তার হোসেন হেলালী বলেন, ‘আমার মেয়ের জামাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পোর্টে কাস্টম ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিল। দুদিনের ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার যাওয়ার জন্য সে ঢাকায় আসে এবং গ্রিন লাইন বাসের টিকিটও কাটে। ঢাকায় আসার পর পুরো ফ্যামিলি নিয়ে কাচ্চি বাড়ি রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। এরপর তারা আর ফিরে আসেনি। কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তিনি।

তিনি আরও জানান, শাহ জালাল উদ্দিন কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম মরিচ্যা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কাশেমের সন্তান। তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাস্টমস কোয়াটারে থাকতেন।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া তিনজনের মরদেহ শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগুনের ঘটনায় একই পরিবারের নারী-শিশুসহ তিনজন মারা গেছেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের মরদেহ শনাক্ত করা হয়। শনিবার তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে শুক্রবার রাতে শাহজালালের বড় ভাই হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান সাজুসহ তার পরিবারের লোকজন তাদের মরদেহ রিসিভ করতে ঢাকার পথে রয়েছেন।

তাঁরা ৫ ভাই, এক বোনের মধ্যে শাহজালাল দ্বিতীয়। বাবা-মাও আছেন।

এদিকে বেইলি রোডের আগুনে নিহতদের মধ্যে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নারী-শিশুসহ আরও বেশ কয়েকজনের মরদেহ মর্গে রয়েছে বলে জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে ওই ভবনটিতে ভয়াবহ আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সাততলা ভবনের সব ফ্লোরে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: