জেলায় ৫৩ কেন্দ্রে এবার এসএসসি সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে ৩০৩১৮জন পরীক্ষার্থী

খন্দকার মোহাম্মদ হোসাইন (বিশেষ প্রতিবেদক):

আজ ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে সারা দেশে এসএসসি-দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু। কক্সবাজার জেলার ৫৩ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী এবার ৩০,৩১৮ জন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবদের নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারন) চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা ও আইসিটি বিভীষণ কান্তি দাসের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রস্তুতি সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারন) বিভীষণ কান্তি দাস কেন্দ্র সচিবদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি নিরপেক্ষ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন বলে জানান।

এদিকে পরীক্ষার্থীদের জন্য ৭টি নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। নির্দেশনা সমুহ হলো প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকে বিধায় পরীক্ষার্থীর বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়জন নির্ধারিত সময়ে কোনভাবেই পরীক্ষা হলের প্রাঙ্গনে অবস্থান করতে পারবে না। কোন পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র ও রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ছাড়া অন্য কোন নোট, কাগজ, বইপত্র, মোবাইল ফোন ও কোন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সঙ্গে আনতে পারবে না।

পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের কলম, কালি, বল পয়েন্ট কলম ও পেন্সিল সঙ্গে আনবে এবং সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ও যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা নিজেরাই করবে। পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠায় নির্দিষ্ট স্থানে নিজ বোর্ডের নাম,পরীক্ষার নাম, রোল নম্বর, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোডের ঘর যথাযথভাবে কালো বল পয়েন্ট কলম দ্বারা পূরণ/ভরাট করবে।

পরীক্ষার্থীরা উত্তর পত্রের নির্ধারিত স্থান হতে উত্তর লিখা শুরু করবে।উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠা ব্যতীত অন্য সব পাতার উভয় পৃষ্ঠাতেই উত্তর লিখতে হবে। উত্তরপত্রের যে সব অংশ বল পয়েন্ট কলম দ্বারা পূরণ করতে বলা হয়েছে তা অবশ্যই কালো বল পয়েন্ট দ্বারা পূরণ করতে হবে।

উত্তরপত্রের কভার পৃষ্ঠায় নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্যত্র কিছু লেখা বা দাগ দেয়া নিষিদ্ধ ।

উত্তরপত্রটিকে কোন অবস্থাতেই ভাঁজ করা যাবে না। উত্তরপত্রে আপত্তিকর লিখা/অসৌজন্যমূলক মন্তব্য বা অনুরোধ / উত্তরপত্র জমা না দিয়ে হল ত্যাগ করা, পরীক্ষা পরিচালনায় নিযুক্ত কোন ব্যক্তির প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন বা সুষ্ঠু পরীক্ষা পরিচালনায় কোনরূপ বাধার সৃষ্টি করা হলে পরীক্ষা বাতিলসহ আইনানুগ কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  উত্তরপত্রের অভ্যন্তরে কোন জায়গায় পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর, মোবাইল/ টেলিফোন নম্বর, স্কুলের  নাম, কেন্দ্রের নাম কোন অবস্থাতেই লিখা যাবে না। লিখলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল বলে গণ্য হবে। পরীক্ষা শেষে কক্ষ পরিদর্শকগণ কর্তৃক উত্তরপত্র সংগ্রহ করার পূর্বে কোন পরীক্ষার্থী তার আসন ছাড়তে পারবে না।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারন) বিভীষণ কান্তি দাস জানান- পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সড়কে পরীক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করে কেন্দ্রে যেতে পারে সে বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সকল কেন্দ্রে নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহনের জন্য এবং আইনশৃংখলা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

এদিকে জেলা প্রশাসকের শিক্ষা ও কল্যান শাখা সূত্রে জানা যায়, জেলায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৫৩ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৩শ ১৮ জন। তৎমধ্যে এসএসসির ৩১ কেন্দ্রে ২১৮৯৭ জন, দাখিলের ১৪ কেন্দ্রে ৬৯৪৪ জন এবং ভোকেশনালের ৮ কেন্দ্রে ১৪৭৭ জন। 

এসএসসিতে ৩১ কেন্দ্রের কেন্দ্রওয়ারি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হল- কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮৭৯  জন, ঈদগাও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭১৭ জন, কক্সবাজার সরকারি বালিকা কেন্দ্রে  ৯৬৫জন, ঈদগাঁও জাহানারা ইসলাম বালিকা কেন্দ্রে  ৬৯২ জন, কক্সবাজার মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রে  ৫৯২ জন,খুরুস্কুল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৮৫ জন, রামু খিজারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে  ৯৩৯ জন, রামু বালিকা কেন্দ্রে  ৫০২ জন, চকরিয়া সরকারি বালক বিদ্যালয়ে ১৬৪০ জন, চকরিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ১৩৫০ জন, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ কেন্দ্রে ১৩৫২জন, বদরখালী কলেজ ৫৪১ জন, কুতুবদিয়া সরকারি বালিকা কেন্দ্রে ৪৮৮ জন, ধুরুং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭৩৫ জন, মহেশখালী সরকারি বালিকা কেন্দ্রে ৬৮১ জন, কালামারছড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৪৩ জন, মাতারবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০৪ জন, মহেশখালী বালিকা কেন্দ্রে ৫০১ জন, ইউনুচখালী নাসিরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ৫৯৩জন, উখিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪২১ জন, উখিয়া বালিকা কেন্দ্রে ৯৪৩ জন, পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯৬৮ জন, কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় ৪৮০ জন, টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬০৭ জন, টেকনাফ আলী আছিয়া কেন্দ্রে ৫৯৩ জন, এজাহার বালিকা কেন্দ্রে ৩৫১ জন, নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৫৫, পেকুয়া জিএমসি ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে ৫২৪ জন, পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে  ১২২০জন।

অপরদিকে দাখিল পরীক্ষায় জেলায় ১৪ কেন্দ্রে ৬৯৪৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। এদের মধ্যে  হাশেমিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে ৪৩১ জন,  কক্সাবাজার ইসলামিয়া আদর্শ মহিলা কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৫২৭ জন, ঈদগাও আলমাছিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৭৩০ জন, মেরংলোয়া রহমানিয়া ইসলামীয়া  দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে  ৩৬১৪০৬ জন, রামু গর্জনীয়া ফয়জুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ২৪৯ জন, চকরিয়া আনোয়ারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৯৭৭ জন, আমজাদিয়া রফিকুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪৮৭ জন, কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৩৮৭ জন, মহেশখালী পুটিবিলা ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪২৯ জন, কালামারছড়া ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৫০৮ জন, রাজাপালং এমইউ ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৬৯১ জন, রঙ্গিখালী দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪৩১ জন, পেকুয়া আনোয়ারুল উলুম আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৫০৯ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। 

অপরদিকে ভোকেশনালের ৮ কেন্দ্রে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪৭৭ জন। এরমধ্যে কক্সবাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের পরীক্ষার্থী  ৩৯০ জন, রামু টেক্সটাইল ইনিস্টিউটে কেন্দ্রে ২৬১ জন,রামু খিজারীতে ১৪২ জন, কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন কেন্দ্রে ১৮৭ জন, উখিয়া নুরুল ইসলাম বিএম স্কুল এন্ড কলেজে ৯০ জন, মহেশখালী আইল্যান্ড হাইস্কুল কেন্দ্রে ২৫৫ জন, আল ফারুক দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৩৩ জন এবং টেকনাফ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ১১৯ জন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: