বিদ্যালয় ভবন উদ্বোধন করবেন সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জলেয়ারমারঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কায়সার লিটনের হাত ধরে একের পর এক ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছে।
এ সাফল্যের পেছনে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো: কায়সার লিটনের নানা উদ্ভাবনী কাজের ছক এবং তা বাস্তবায়নে সহকর্মীদের দলবদ্ধ পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শুধু চাকরির প্রচলিত নিয়মে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিজেদের আটকে রাখেননি। বরং সৃজনশীলতা দিয়ে পরিচিত করে তুলেছেনে বিদ্যালয়টিকে।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ে ঢুকে দেখা গেল, একটি শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নিচ্ছেন একজন শিক্ষিকা। শিক্ষক মিলনায়তনে প্রধান শিক্ষক কায়সার লিটনসহ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার দিকে নজর রাখতে ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে খোঁজ খবর রাখছেন।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের জলেয়ারমারঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৩০জন। উক্ত প্রতিষ্ঠান এমপিও নন এমপিও মোট ১২ জন শিক্ষকদের নিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে এলাকার শাপলাপুর ইউনিয়নের নলবিলা, শাপলাপুর বাজার, ষাইটমারা, নয়া পাড়া, জেএম ঘাট, দিনেশপুর, বারাইয়া পাড়াসহ অসংখ্য পাড়ার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে। এ বিদ্যালয়ের অবস্থান জেএম ঘাট এলাকার একটি অংশে। এখানকার বেশির ভাগ মানুষই কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কায়সার লিটন বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ৫০ তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৩ইং প্রতিযোগিতায় উপ-কমিটির দায়িত্ব পালন করার জন্য মনোনীত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। বিদ্যালয়ে কায়সার লিটন যোগদান করার পর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্য শতভাগ।
উক্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি ফরিদুল আলম বলেন, ‘বিদ্যালয়টি মহেশখালীর উপজেলার মধ্যে ভালো। প্রধান শিক্ষক কায়সার লিটন বিদ্যালয়ের দায়িত্বশীলতার সহিত খুব খাটেন। প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষের বাইরেও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার খোঁজখবর রাখেন।
দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার নির্মাণ:
মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের অজপাড়া জেমঘাট জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আগে কোনো স্থায়ী শহীদ মিনার ছিল না। ফলে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারত না শিক্ষার্থীরা। তবে এবছর যথাযথযোগ্য মর্যাদায় আসন্ন ২১ ফেব্রুয়ারীতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীরা অধীর আগ্রহ হয়ে শহীদ ব্যধিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করবেন। ওই স্কুলেরই নিজস্ব অর্থায়ানে টাকা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন একটি শহীদ মিনার। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খড়ের ঘর, টিনের ঘর, বিল্ডিংয়ের যাই হোক, শিক্ষার উৎকৃষ্ট মান, সুন্দর পরিবেশ এবং ভালো ফলাফলই শেষ কথা। তবে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতারা যদি হন উদারমনা, শিক্ষানুরাগী, রুচিশীল এবং বিত্তবান, তাহলে চাইলেই তারা প্রতিষ্ঠানের ভবন শিল্পের ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন করতে পারেন। যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের নয়নাভিরাম পরিবেশ ও স্থাপনায় মুগ্ধ হয়ে শিক্ষা গ্রহণে আরও বেশি আগ্রহী হতে পারে নিঃসন্দেহে। আধুনিক স্থাপত্য শৈলী ও দৃষ্টি নন্দন নকশায় নির্মিত উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ী মেঠো পথ দিয়ে জেমঘাট বাজারের পূর্বপাশে ওই স্কুলটিকে প্রথম দর্শনে যে কেউ ভাবতে পারেন এটি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। প্রতিদিন অনেকেই স্কুলটি দেখার জন্য ছুটে আসেন। ভবনের সামনে ও পেছনের অংশসহ চারপাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা ও ভবনটির সঙ্গে সেলফিবন্দি করেন নিজেদের।
জেমঘাট এলাকায় বিশাল জায়গা নিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ। তিনি তীলে তীলে শ্রম ও মেধা দিয়ে অজপাড়া জনপদে শিক্ষা বিস্তারের জন্য কাজ করেছেন জনশ্রুতি রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা রেখে চলছে বিদ্যালয়টি। সাবেক মেম্বার ছৈয়দ আহমদ, মৌলভী মোহাম্মদ মুজিবুল হক, ফরিদুল আলম, মৌলভী নাছিরের হাত ধরে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৬ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলছে ঐতিহ্যবাহী উপজেলার জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়টি। স্কুলটি ১৯৯৭ সালে কড়ের এবং টিনের স্থাপনার মাধ্যমে পাঠদান শুরু করলেও কয়েক যুগ পর হলেও স্থানীয় এমপি মহোদয় আশেক উল্লাহ রফিকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আধুনিক নকশায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সম্পন্ন করা হয় দ্রুততম সময়ে। গেল বছরের ২০২৩ সালের দিকে নবনির্মিত ভবনে ক্লাস শুরু হয়।
৫ম তলা বিশিষ্ট এ স্কুলটির পশ্চিম পাশে নান্দনিক ডিজাইনে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার। স্কুলের ভেতরে বিশাল জায়গায় শিক্ষার্থীদের হাঁটাচলা ও খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। স্কুলে প্রবেশের মূল গেইটের সামনে আছে খেলার মাঠ। নবনির্মিত ভবনসহ যাবতীয় অবকাঠামো উন্নয়নের রোল মডেল একমাত্র মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এমপি। তাঁর সার্বিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এ বিদ্যালয় এলাকাবাসীরা পেয়েছে। এতে এলাকাবাসীদের মনে উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছে।
উক্ত বিদ্যালয়টি মাননীয় এমপি আশেক উল্লাহ রফিকের নির্ধারিত তারিখ পেলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরিদুল আলম ও প্রধান শিক্ষক মো: কায়সার লিটন।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাবর্ষ থেকেই নির্দিষ্ট আসনের জন্য ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। ফলে শুরু থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানসম্পন্ন শিক্ষার কারণে এই বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী এসেছে।
0 comments: