অসংখ্য বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের কারিগর একজন আশরাফ আলী রাজমিস্ত্রি

মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (চকরিয়া টাইমস) : 

বরইতলী-চকরিয়ার নির্মাণ শিল্পে একটি অতি পরিচিত নাম আশরাফ আলী প্রকাশ আশরাফ আলী রাজমিস্ত্রি। তিনি উত্তর বরইতলীর ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পিতা মৃত আব্দুল জব্বার।

অত্যন্ত অমায়িক, ভদ্র, কর্মনিষ্ঠ ও সজ্জন এ ব্যক্তি আমার নিকট প্রতিবেশী। ছোটবেলা থেকেই আমরা তাকে 'বদ্দা' (বড় ভাইয়া) বলে ডেকে আসছি। বিগত ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি  ৩৮ বছর যাবত তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করে যাচ্ছেন। বলতে গেলে তখন এ এলাকায় উল্লেখযোগ্য কোনো রাজমিস্ত্রি ছিলোনা। তিনিই ছিলেন প্রথম রাজমিস্ত্রি- যিনি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এলাকার বেকার যুবকদেরকে বিনামূল্যে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মপোযোগী করে গড়ে তোলেন। তাঁর হাতে গড়া শতাধিক শিষ্য বর্তমানে রাজ মিস্ত্রিতে প্রশিক্ষিত হয়েছেন। এসব শিষ্য কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নিজ পরিবারকে স্বাবলম্বী ও উন্নত করে যাচ্ছেন। 

দিন দিন রাজমিস্ত্রির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের চাহিদাও বাড়ছে। এখন এলাকার বাইরে থেকে কোনো রাজমিস্ত্রি এনে নির্মাণ কাজ করতে হয়না; বরং আশরাফ আলী মিস্ত্রির শিষ্য-প্রশিষ্যরাই বাইরে গিয়ে সুনামের সাথে কাজ করে প্রচুর টাকা-পয়সা রোজগার করে আসছেন। এমনকি আশরাফ মিস্ত্রির শিষ্য / প্রশিষ্যরা বিদেশে গিয়েও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। এজন্যে তাঁর শিষ্যরা তাঁকে উস্তাদ-জ্ঞানে বেশ সমীহ করে চলেন।

তিনি উচ্চ বা সাধারণ শিক্ষিত না হলেও মোটামুটি অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তি। তার মেলামেশা ও কাজকারবার বেশির ভাগ শিক্ষিত জনদের সাথে হওয়ায় এর প্রভাবও তার চলাফেরা এবং কর্ম জীবনে প্রতিফলিত হয়। এমন একজন উদ্যোক্তা এলাকার জন্য সম্পদ। তার অবদানে আজ বহু নিম্নবিত্তের সন্তান দক্ষ কর্মীতে পরিণত হয়েছেন। এজন্য তিনি অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। আমাদের উচিত এমন ব্যক্তিকে যথাযথ প্রমোট করা।

আমার মতে তিনি একজন গুণীব্যক্তি হিসেবে সংবর্ধনা পাওয়ার উপযুক্ত। কারণ গুণীর কদর না হলে গুণীব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেন না। উচ্চ শিক্ষিত নাহলে কোনো গুণীব্যক্তি সংবর্ধনা পাওয়ার উপযুক্ত হবেন না, এমন কোনো কথা নেই। কারণ গুণী হয়ে কেউ জন্মগ্রহণ করেন না; বরং কর্ম গুণেই মানুষ স্মরণীয় হন।

প্রসঙ্গত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-র সিও বরিতলী ৩নং ওয়ার্ডের কৃতী সন্তান জনাব মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি জনাব ড. মছরুরুল মওলা, শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান, বরইতলী ৪নং ওয়ার্ডের কৃতী সন্তান ড. মোহাম্মদ আলী, ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম হিন্দুপাড়ার ইঞ্জিনিয়ার বাবু দিলীপ কুমার, বরইতলীর পহরচাঁদা নিবাসী কবি অধ্যাপক রুহুল কাদের সহ এলাকার অসংখ্য ডাক্তার, কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ সকলকে বিশেষ অবদানের জন্য গণসংবর্ধনার আয়োজন করা যায়। এতে আশা করা যায় বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের এলাকার কৃতীব্যক্তিদের পরিচয় লাভ করে বিশেষভাবে উপকৃত হবে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: