চকরিয়ায় বিপন্ন প্রজাতির ২ ভালুক শাবকসহ ‘পাচারকারি’ গ্রেপ্তার

শাকিলুর রহমান শাকিল (চকরিয়া টাইমস) : 

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিপন্ন প্রজাতির কালো ভালুকের দুইটি শাবকসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাকে আন্তর্জাতিক ‘পাচারকারি চক্রের সদস্য’ বলছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী এলাকায়  অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার দীপক দাস (৩২) দিগর পানখালী এলাকার মৃত সোনারাম দাসের ছেলে। উদ্ধার হওয়া ভালুক শাবক দুইটির বয়স আনুমানিক দুই মাস এবং প্রতিটির ওজন এক কেজির বেশি।

শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, দীপক দাসের আমদানি-রপ্তানি নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী পাচারকাজে জড়িত থাকার ব্যাপারে পুলিশের কাছে আগে থেকে তথ্য ছিল। এতে পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে তার ওপর নজরদারি শুরু করে। 

সম্প্রতি দুই ভালুক শাবক পাচার করে এনে দীপক নিজ হেফাজতে জিম্মি করে রেখেছে- এমন তথ্য পেয়ে শুক্রবার রাতে দিগর পানখালী এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল ।

অভিযানে সন্দেহজনক বাড়িটি ঘেরাও করলে দীপক পালানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় ধাওয়া দিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে বাড়িটিতে তল্লাশী চালিয়ে ভালুক শাবক দুটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, “গ্রেপ্তার দীপক দাস আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণি পাচারকারি চক্রের সক্রিয় সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বান্দরবান সীমান্তের চোরাইপথে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে আমদানি-রপ্তানি নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী আনতেন।

পরে কিছুদিন নিজ হেফাজতে রেখে অধিক মুনাফায় পাচার চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করতেন। উদ্ধার করা ভালুক শাবকগুলো ১৪ দিন আগে তিনি মিয়ানমার থেকে পাচার করে আনেন।"

দীপকের দেওয়া তথ্য মতে, সক্রিয় পাচার চক্রের সদস্যরা সাতক্ষীরা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী ভারতে পাচার করে থাকে।”

সাম্প্রতিক সময়ে এই পাচার চক্রের সদস্যরা দুইটি ভালুক, দুইটি উল্লুক ও ছয়টি লজ্জাবতী বানর ভারতে পাচার করার তথ্য পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন মাহফুজুল ইসলাম

বনায়ন ধ্বংস এবং বন্যপশু শিকারের কারণে ভালুকদের সংকটাপন্ন প্রজাতির প্রাণি হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)। বাংলাদেশে কালো ভালুক মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত এবং বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসীল-১ অনুযায়ী এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

গ্রেপ্তার দীপক দাসের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে চকরিয়া থানায় মামলা হয়েছে বলে জানান এসপি মো. মাহফুজুল ইসলাম।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: