ভন্ড নষ্ট দরবারের সাথে আলেম ওলামা ও পীর মাশায়েখদের কোন সম্পর্ক নেই

চকরিয়া টাইমস : 

দেশের বরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ আওলাদে রাসুল (সা.) আল্লামা সৈয়দ আনোয়ার হোসাইন তাহির জাবিরী আল মাদানি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, কক্সবাজারবাসী ভাগ্যবান, বায়তুশ শরফের মত একটি মর্যাদাবান প্রতিষ্ঠান এখনে হয়েছে। সব দরবারের সাথে আমাদের সম্পর্ক নেই। বাজারে অধিকাংশ দরবার ভন্ড, নষ্ট। এদের সাথে সত্যিকারের আলেম ওলামা ও পীর মশায়েখদের কোন সম্পর্ক নেই। 

ইসলাম পণ্য নয়, যে বেচা বিক্রি হবে। তিনি দেশের সকল আলেম ওলামা ও পীর মশায়েখদের সত্যের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

রসুল সঃ এর শানে কোন বেয়াদবী সহ্য করা হবেনা  জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য সকল মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। 

তিনি শুকরিয়া আদায় করে বলেন, বায়তুশ শরফের মরহুম পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল জব্বার তাঁকে চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদে আনার জন্য চেষ্টা করেছিলেন।

রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী সভাপতির বলেন, শরিয়ত ও তরিকত জগতের সম্রাট শাহেনশাহে বাগদাদ সাইয়্যিদুনা আবদুল কাদের জিলানী (রাহ.) এমন এক যুগ সন্ধিক্ষণে (৪৭১-৫৬১ হিজরি) আবির্ভূত হন যখন ভিন্নধর্মী দর্শন মুসলিম শিক্ষা ও চিন্তার জগতকে দারুণভাবে বিভ্রান্তির কালো থাবা বিস্তার করে ফেলছিল। 

শিরক, কুফর ও বিদআত নিত্য নবরূপে সঞ্চারিত হচ্ছিল মুসলিম মননে। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। সেই দুঃসময়ে উম্মতে মুহাম্মদীকে সঠিক পথের দিশা দেবার জন্য তাঁর মত একজন মুজাদ্দিদের, একজন পথ প্রদর্শকের, একজন মহান ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব হওয়া খুবই জরুরি হয়ে পড়েছিল।

তিনি মুজাদ্দিদ এর ভূমিকা পালন করেছিলেন। এ জন্যই তিনি ‘মুহিউদ্দীন’ তথা পুনর্জীবিতকারী উপাধিতে ভূষিত। তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ যুগে যুগে সঠিক পথের দিশা দিয়ে আসছে। তাঁর অপরিসীম জ্ঞানের পরিধি, ভাষার মাধুর্যতায় মানব সমাজকে ইসলামের আদর্শে অনুপ্রাণিত করেছেন। 

রাহবারে বায়তুশ শরফ বলেন, বায়তুশ শরফ এর প্রতিষ্ঠাতা মরহুম শাহ মাওলানা মীর মুহাম্মদ আখতার (রাহ.) ছিলেন ত্বরিকায়ে কাদেরীয়ার ইমাম হযরত শায়খ মুহিউদ্দিন আব্দুল কাদের জিলানী রাহ.) এর অধঃস্থন বংশধর।

রোববার (৬ নভেম্বর) বাদ মাগরিব ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুম উপলক্ষে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের উদ্যোগে ইছালে ছওয়াব মাহফিলের মূল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মাহফিলের প্রধান অতিথি ও সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার হাদিয়ে জামান শাহসূফি শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ আবদুল জব্বার (রাহ.) বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রাহ.) এর ওফাত দিবস স্মরণে ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুম উপলক্ষে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে এই ইছালে ছওয়াব মাহফিলের প্রবর্তন করেছিলেন।

১৯৯৮ সালে তাঁর ইন্তেকালের পর বায়তুশ শরফের মরহুম পীর বাহারুল উলুম আল্লামা শাহ মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (রাহ.) এই মাহফিলের আঞ্জাম দেন। 

২০২০ সালে তাঁর ইন্তেকালের পর রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (ম.জি.আ) এই মাহফিলের আঞ্জাম দিয়ে আসছেন।

কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লের মহাপরিচালক শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলমের পরিচালনায় আলহাজ্ব মাওলানা কাজী নাসির উদ্দিন, আলহাজ্ব মাওলানা মামুনুর রশিদ নুরী, আলহাজ্ব মাওলানা নুরুল আলম ফারুকী, মাওলানা লোকমান হাকিম জিহাদি, মাওলানা ইসমাইল হানাফী, মাওলানা মহিউদ্দিন মাহবুব, মাওলানা শরীয়ত উল্লাহ জিহাদী, মাওলানা ইমরান সাঈদ, মাওলানা জিয়াউল করিম জিয়া, মাওলানা রিদুয়ানুল হক নিজামী বক্তব্য রাখেন।

বায়তুশ শরফ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মাওলানা আজিজুল হক, চুনতি হাকিমিয়া আলিয়া মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ আল্লামা মাহমুদুল হক, বর্তমান অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা ফারুক হোছাইন, লোহাগাড়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ডঃ আব্দুল কাদের নিজামী প্রমুখ।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: