ফুলছড়ি নদীর তীব্র ভাঙ্গনে গোমাতলী রাজঘাট গ্রামের অস্তিত্ব হুমখির মুখে!

সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও : 

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী রাজঘাট গ্রাম বিগত কয়েক বছরের তীব্র নদী ভাঙনের কারণে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে।
ফুলছড়ি নদীর তীব্র ভাঙনে এই গ্রামের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। গত ১০ বছরে প্রায় ২০ টির অধিক বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড উত্তর গোমাতলী রাজঘাট পাড়া বেয়ে গেছে ফুলছড়ি নদী।
ফুলছড়ি নদীর কড়াল গ্রাসে প্রতি বছরই নদী ভাঙন দেখা দেয় এই গ্রামে। শুধু রাজঘাট গ্রামই নয় পাশ্ববর্তী পুর্ব গোমাতলী, ব্রীজের গোড়া ও বার্মাইয়া পাড়া গ্রামের নদী ভাঙন দেখা যায়।
উজানি পানি আসলে ফুলছড়ি নদী তার পুরনো চেহারায় ফিরে যায়। ধনী, গরিব, অসহায়, বীরমুক্তিযোদ্ধা সহ অনেকের বাড়ি ঘর খেয়ে ফেলেছে এই প্রমত্তা ফুলছড়ি নদী। কবরস্থান, জেটি
বসত ভিটা সহ বিসিকের জমি বিলীন হচ্ছে এই নদীতে।
ওয়ার্ড আ'লীগের সাধারন সম্পাদক নুরুল হুদা
জানান, আমার বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
ফুলছড়ি নদীর পেটে গেছে আমার ভিটে মাটি । একারণে বাড়ি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নুতন ঠিকানা খুঁজতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রতি বছর ফুলছড়ি নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামি দুই বছরর মধ্যে রাজঘাট পাড়া বলে কোন গ্রাম মানচিত্রে থাকবে না।
যদিও স্থানীয় গোমাতলী সমবায় কৃষি ও মোহাজের সমিতির উদ্দোগে গ্রাম রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদী ভাঙন রোধে ব্যাগ ফেলা হয়েছে।
এদিকে প্রতি বছর নদী ভাঙনের শিকার হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে স্থায়ী কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এমনতর অভিযোগ করেছেন ভাঙনের কবলে পড়া পরিবার গুলো।
রাজঘাট গ্রামের জাহেদুল ইসলাম জানান, গত ১ দশকে তার বসতবাড়ী নদীতে চলে গেছে। এখন তিনি আর পারছেন না বলেও জানান।
ঐ গ্রামের সিরাজ মিয়া, আমিনুর রহমান, আবু ছৈয়দ জানান, পাড়ার কবরস্থান থেকে বিসিক পর্যন্ত উচুঁ বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে অচিরেই এই গ্রাম বিলীন হবে। তারা অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফরহাদ হোসেন জানান, গোমাতলী রাজঘাটপাড়া সহ ফুলছড়ি নদীর তীরবর্তী কবরস্থান, জেটিঘাট ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। বেশকটি বসত ভিটা ও বাড়ি ঘর নদীতে বিলীন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা করা হবে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, রাজঘাট পাড়া গ্রামের নদী ভাঙনের বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। নদী ভাঙন রোধে দ্রুত সময়ে ঐ এলাকায় কাজ করা হবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 comments: