বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২০২২ সেশনের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচন ও সেক্রেটারি জেনারেল মনোনয়ন সম্পন্ন হয়েছে। সারাদেশে অনলাইনে সদস্যদের ভোটে কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রাশেদুল ইসলাম। সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে মনোনীত হয়েছেন রাজিবুর রহমান। আজ ২৯ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টায় ছাত্রশিবিরের সহকারি নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুলের সঞ্চালনায় ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মতিউর রহমান আকন্দের পরিচালনায় শহীদ আব্দুল মালেক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতির নাম ঘোষণা করেন ছাত্রশিবিরের ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার। নাম ঘোষণার পর নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতিকে শপথ পাঠ করান ছাত্রশিবিরের ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার। গত ২৭ ডিসেম্বর সকাল ১১টা থেকে ২৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত সারাদেশে অনলাইনের মাধ্যমে একযোগে কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হয়। ছাত্রশিবিরের সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি ২০২২ সেশনের জন্য কার্যকরী পরিষদের সঙ্গে পরামর্শ করে রাজিবুর রহমানকে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে মনোনয়ন দেন।
উল্লেখ্য নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম এর পূর্বে যথাক্রমে সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক, কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান সম্পাদক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছেন।
নবমনোনীত সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান এর পূর্বে কেন্দ্রীয় দপ্তর, কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও দাওয়াহ, কেন্দ্রীয় প্রকাশনা, কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে রসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছেন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। অনলাইনে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবর রহমান ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। আরো যুক্ত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিবৃন্দ। দেশ বিদেশ থেকে ইসলামিক স্কলারগণ ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনে সারাদেশের সদস্যবৃন্দ অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীরে জামায়াত বলেন, ছাত্রশিবির জাতির জন্য এক নিয়ামতপূর্ণ সংগঠনের নাম। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে শুরু করে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা কুরআনকে বুকে ধারণ করে সময়ের বাকে বাকে সর্বোচ্চ ত্যাগের নজির পেশের মাধ্যমে আল্লাহর রহমতে আজ এ পর্যায়ে এসেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির সময়ের পরিক্রমায় এমন একটি জায়গায় পৌঁছেছে যেন মনে হচ্ছে আজ আবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন তাকওয়ার নিয়ামত সকলে ভাগ্যে জুটে না, যার কপালে জোটে সেই বড় ভাগ্য বান। আজ ক্যাম্পাসগুলো সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের ক্যান্টমেন্টে পরিনত হয়েছে। তারা মাদকসহ সকল অনৈতিকতার মধ্যে ডুবে আছে, তাই ছাত্রশিবিরকে আবার জেগে উঠতে হবে, নতুন করে ভাবতেও হবে। ইসলামী আন্দোলন সাময়িক সময়ের জন্য নয় এটি একটি হীরার মুকুট যে মাথা থেকে ফেলে দেয় সে সর্বহারা।
তিনি নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি ও নবমনোনীত সেক্রেটারি জেনারেলসহ সকল পর্যায়ের জনশক্তিদের জন্য আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়া করেন।
নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি সংগঠনের সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীল, জনশক্তি ও শুভাকাংখিসহ দেশবাসীর নিকট দোয়ার অনুরোধ করেছেন।
0 comments: