নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে আইন-শৃংখলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় চকরিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ শামসুল তাবরীজের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় সভার শুরুতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম আচরণবিধি সংক্রান্ত ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। তিনি বলেন, আপনারা চান অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিরপেক্ষ নির্বাচন; আমরাও চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমাদের চাওয়ায় ভিন্নতা নেই। তাই সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি সুন্দরতম নির্বাচন উপহার দিতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
জেলা প্রশাসক মামনুর রশিদ বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে এবং ভেতরে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। নির্বাচনী মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। বৈধ অস্ত্রের বিষয়ে পরিপত্র অনুযায়ী এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান জোরদার করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের জন্য কোন কেন্দ্রই ঝুঁকিমুক্ত নয়। সব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সেটি মাথা রেখে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সবকটি কেন্দ্র গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন চলাকালে কোনো ধরণের আইন শৃংখলার ব্যত্যয় ঘটলে নিয়োজিত প্রশাসন এর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে মোটেও বিলম্ব করবেনা বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ তিনি।
অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, চকরিয়া থানার ওসি শাকের মুহাম্মদ যুবায়ের।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাহাত উজ-জামানসহ ডিজিএফআই, এনএসআই এর প্রতিনিধিবৃন্দ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চার মেয়র পদপ্রার্থী যথাক্রমে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের আলমগীর চৌধুরী (বর্তমান মেয়র), জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মনোয়ার আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের জিয়াবুল হক ও কম্পিউটার প্রতীকের ফয়সাল উদ্দিন সিদ্দিকী। এছাড়া সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের অর্ধশতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এতে প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে পাল্টাপাল্টি হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। ইভিএম সম্পর্কে অনেকের ধারণা না থাকার কথা উল্লেখ করে প্রার্থীরা বলেন, জনসাধারণকে এর সফল প্রয়োগ নিশ্চিত করতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এ জন্য বিষয়টি অত্যাধিক গুরুত্ব সহকারে নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রার্থীরা।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনকে শতভাগ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত ফোর্স চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন অতিরিক্ত ফোর্সের অনুমোদন দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করেছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দুইদিন আগে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদানের বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ভোটারদের।’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান শুরু করবে পুলিশ। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কেউ বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ালে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।
0 comments: