অনলাইন ডেস্ক :
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন শের বাহাদুর দেউবা। তাকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় একথা জানিয়েছে।
নেপালের সুপ্রিম কোর্ট ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্ট পুনর্বহাল করে দেউবাকে প্রধানমন্ত্রী করার নির্দেশ দেওয়ার পর মঙ্গলবার তাকে নিয়োগ দেওয়া হল।
নেপালি কংগ্রেস পার্টির ৭৫ বছর বয়সী নেতা শের বাহাদুর দেউবা এর আগে চারবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার নিয়ে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে কে পি শর্মা অলিকে সরিয়ে দেউবাকে তার স্থলাভিষিক্ত করার রায় দেয়।
সম্প্রতি কয়েকমাসে অলি আস্থাভোটে হেরে গিয়ে দু’বার পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছিলেন। তার এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে আদালত।
গতবছর ডিসেম্বর থেকেই নেপাল রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অলি তখন পার্লামেন্ট এবং নিজ দলেও সমর্থন হারাচ্ছিলেন।
সেই সময়ে অলির পরামর্শে প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ডিসেম্বরে প্রথম পার্লামেন্ট ভেঙে দেন । আদালত এ পদক্ষেপ অসাংবিধানিক বলে রায় দিলে আবার বহাল হয় পার্লামেন্ট।
এরপর পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে হেরে যান অলি। কিন্তু বিরোধীরা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী পদে টিকে যান তিনি।
কিন্তু নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতে অলি আবার গত মে মাসে পার্লামেন্ট ভাঙেন। পরে তার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যান আইনপ্রণেতারা। তাদের আবেদনের জবাবেই আদালত মঙ্গলবারের মধ্যে দেউবাকে প্রধানমন্ত্রী করার নির্দেশ দেয়।
কিন্তু নতুন প্রধানমন্ত্রী দেউবাও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন। তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে টিকে থাকতে হলে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট নিশ্চিত করতে হবে আগামী মাসেই।
কারণ, দেউবাকে সমর্থন দেওয়া মাধব কুমার নেপালের দল সিপিএন-ইউএমএল এখন নেপালি কংগ্রেস জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তাই দেউবা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে তাকেও পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হতে পারে।
তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এ মুহূর্তে তার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং টিকাকরণ কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়া। দেশটিতে ১৩ লাখের বেশি মানুষ প্রথম ডোজ কোভিড টিকা নেওয়ার পর এখন দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছে।
দেউবার দলের একজন ঊর্ধ্বতন নেতা বলেছেন, তিনি (দেউবা) দেশে দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন।
দেউবা এর আগেও সরকার পরিচালনার সময় অনেক সংগ্রাম করেছেন বলে জানিয়েছেন কাঠমাণ্ডুর তিভূ্বন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞানের এক অধ্যাপক। তিনি বলেন, “অতীতে দেউবা যতবারই প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ততবারই তাকে বড় বড় সঙ্কট মোকাবেলা করতে হয়েছে।”
0 comments: