অনলাইন ডেস্ক:
লালগ্রহ মঙ্গল থেকে বেশ কিছু নতুন ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে চীনের রোবটযান ‘জুরং’, এর মধ্যে একটি সেলফিও আছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মে মাসে মঙ্গলে পৌঁছানো এই রোভার সেলফি তোলার জন্য প্রথমে মাটিতে তারবিহীন একটি ক্যামেরা বসিয়েছে। তারপর ছয় চাকায় কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে নিজের ছবিটি তুলেছে।
ছবিকে জুরংয়ের ডান পাশে যে রকেট চালিত প্ল্যাটফর্মটি দেখা যাচ্ছে, সেটার পিঠে চেপেই গত মাসে মঙ্গলের বুকে নেমে এসেছিল জুরং। রোভার আর প্ল্যাটফর্ম, দুই জায়গাতেই শোভা পাচ্ছে গণচীনের লাল পাতাকা।
জুরংয়ের পাঠানো দ্বিতীয় ছবিতে রোভারটির নিজের প্ল্যাটফর্মকেই দেখা যাচ্ছে। ঢালু র্যাম্পটি ব্যবহার করেই প্ল্যাটফর্ম থেকে মঙ্গলের মাটি ছুঁয়েছিল এই রোবটযান। লাল ধুলোর ওপর রয়েছে তার ঘুরে বেড়ানোর চিহ্ন।
মঙ্গলের উত্তর গোলার্ধের যে বিস্তৃত ভূখণ্ডকে ইউটোপিয়া প্লানিশা নাম দেওয়া হয়েছে, গত ১৫ মে সেই এলাকায় অবতরণ করে সৌরবিদ্যুতচালিত এই রোবট যান।
সেই অবতরণের স্থান থেকে মঙ্গলের দিগন্ত দেখা যাচ্ছে জুরংয়ের পাঠানো আরেকটি ছবিতে। রোভার জুরংয়ের সাফল্য উদযাপনের জন্য এই ছবিগুলো প্রকাশ করেছে চীনা স্পেস এজেন্সি।
বিজ্ঞানীর আশা করছেন, মঙ্গলের বুক থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন তথ্য পাঠাতে পারবে রোভার ‘জুরং’। চীনের পাঠানো এই রোবটটি দেখতে অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার রোভার স্পিরিট ও অপর্চুনিটির মতই।
২৪০ কেজি ওজনের জুরংয়ের নাম দেওয়া হয়েছে চীনের অগ্নিদেবতার নামে। এই রোভারে আছে ছয় ধরনের বৈজ্ঞানিক গবেষণার সরঞ্জাম। সৌরজগতের চতুর্থ গ্রহে কখনো প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল কি না, তা খুঁজে বের করা এর অন্যতম লক্ষ্য।
এর লম্বা মাস্তুলের মত অংশে একটি ক্যামেরা বসানো আছে, যার সাহায্যে এ রোবট চলার পথ দেখে নেয় এবং ছবি তোলে। এছাড়া আরও পাঁচটি যন্ত্রের মাধ্যমে মঙ্গলের আবহাওয়া, পরিবেশ ও প্রকৃতির বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি পাথরের খনিজ উপাদানের অনুসন্ধান করতে পারে ‘জুরং’।
নামার পাঠানো সাম্প্রতিক রোভারগুলোর (কিউরিওসিটি ও পারসিভের্যান্স) মতই শিলাপাথরের রাসায়নিক উপাদান নিরীক্ষা করার জন্য ‘জুরং’ এর সঙ্গে লেজার রয়েছে। তাছাড়া মাটির তলার পানি ও বরফের অস্তিত খুঁজতে এ রোভারের নিচে আছে বিশেষ রেডার।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনা বৃহস্পতিবার মঙ্গলের কক্ষপথ থেকে তোলা ‘জুরং’ এর একটি রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে। মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরতে থাকা নাসার মার্স রিকন্যাইস্যান্স অরবিটারের গায়ে বসানো আছে ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার ওই ক্যামেরা।
0 comments: